শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

সদরঘাট থেকে জিরো পয়েন্ট ৫ ঘণ্টা!

খলিলুর রহমান
প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৩, ১১:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

সদরঘাট থেকে জিরো পয়েন্ট ৫ ঘণ্টা!

গত ৭ মার্চ রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে একটি ভবনে বিস্ফোরণের পরই ওই ভবনটির সামনের ব্যস্ত সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে ওই এলাকার প্রায় সব সড়কে দিনের বেশিরভাগ সময় তীব্র যানজট লেগে থাকে। এর প্রভাব পড়েছে পল্টন, পুরান ঢাকাসহ আশপাশের সড়কগুলোতেও। বাসে ১০-১৫ মিনিটের রাস্তা পার হতে ৪-৫ ঘণ্টা লাগছে। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই এই পথে চলাচলকারী যাত্রীদের।

রোববার (১২ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত গুলিস্তান গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।


বিজ্ঞাপন


সরেজমিন দেখা যায়, গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট থেকে ফুলবাড়িয়া রোড পর্যন্ত পুরো এলাকায় তীব্র যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে থাকছে। অনেকেই বিরক্ত হয়ে বাস থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে যাদের সাথে মালামাল রয়েছে তাদের বাধ্য হয়েই গাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে। যানজটের প্রভাব সদরঘাট, পুরান ঢাকা, পল্টন ও মতিঝিল এলাকাতেও দেখা গেছে।

dm

মিজানুর রহমান নামের এক বাসযাত্রী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাড়ি বরিশাল। চাকরির কারণে ঢাকার মিরপুরে থাকি। গত শুক্রবার জরুরি কাজে আমি বরিশালে গ্রামের বাড়ি যাই। আজ সকালে গ্রাম থেকে সদরঘাট আসি। পরে সদরঘাট থেকে মিরপুরের একটি বাসে উঠি।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাসে উঠে মহাবিপদে পড়ে গেছি। কারণ সদরঘাট থেকে জিরো পয়েন্ট আসতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা। এমন যানজট আমি কখনো দেখে নাই। গ্রাম থেকে চাল, সবজি নিয়ে এসেছি। এগুলো নিয়ে তো হেঁটে যাওয়াও সম্ভব না।


বিজ্ঞাপন


রহিমা বেগম নামে আরেক যাত্রী বলেন, আজ সকালে সদরঘাটে যাওয়ার জন্য রামপুরা থেকে বাসে উঠি। কিন্তু গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট যেতে চার ঘণ্টা লেগেছে।

dm

তিনি বলেন, আমার বাসের অন্য যাত্রীরা নেমে হেঁটে চলে গেছে। কিন্তু আমার সাথে দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের নিয়ে হেঁটে যাওয়া সম্ভব না।

শুধু রহিমা ও মিজানুর রহমান নয়, সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের পর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীকে এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গত ৭ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে সাততলা একটি ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের আরেকটি পাঁচতলা ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দোতলা বিধ্বস্ত হয়। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনার পর থেকে ওই ভবনটির সামনের সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনও ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

গুলিস্তানের ব্যবসায়ীরা ঢাকা মেইলকে জানান, ঘটনার পরদিন বুধবার ওই এলাকার বেশিরভাগ দোকান বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া বৃহস্পতিবার আশপাশের বেশিরভাগ মার্কেটে শোক পালন করা হয়। আর শুক্রবার ছিল সাপ্তাহিক বন্ধ। এছাড়া শনিবারও বেশিরভাগ দোকান খোলা হয়নি। তবে আজ রোববার সকাল থেকে গুলিস্তান এলাকার সব মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানীরা ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেছেন। এতে যানজট কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

dm

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, ভবনটির সামনের রাস্তায় যান চালাচলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো অনুমতি দেয়নি। তাই সড়কটি বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুমতি আসার সাথে সাথে যান চলাচলের জন্য রাস্তাটি খুলে দেওয়া হবে।

ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জন মারা গেছেন। ওই বিস্ফোরণের কেন্দ্রস্থল খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে বেশিকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে সংস্থা দুটি।

কেআর/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর