ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব ৭৩০ কিলোমিটারজুড়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তিনি বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপ্তি অনেক বেশি, কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি এতটা তীব্র নয়। বর্তমানে যেভাবে ‘ম্যাপিং’ করা হয়েছে, তাতে কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা, এই বিস্তৃত এলাকার ৭৩০ কিলোমিটারজুড়ে এ ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে সংবাদিকদেরকে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ব্যাপক বিস্তৃত এলাকায় আঘাত হানবে। উপকূলীয় ১৯টি জেলাকে আমরা ঘূর্ণিঝড় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করছি। তাই উপকূলের সব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার শতভাগ মানুষকে সন্ধ্যার মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হবে।
২৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার লক্ষ্য সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শতভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনাই সরকারের বড় লক্ষ্য। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া গবাদি পশুরও যেন ক্ষয়ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে সাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়াও এটি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ ৯নং বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং' উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় (অক্ষাংশ: ১৯.২° উত্তর, দ্রাঘিমাংশ: ৮৯.২° পূর্ব) অবস্থান করছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় (২৪ অক্টোবর, ২০২২) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত/আগামীকাল ভোর নাগাদ খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বিজ্ঞাপন
আবাহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
টিএই/জেবি