ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সকাল থেকে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টি বাড়তে থাকায় আতঙ্ক ছিল সারা দিন। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় পূর্ব পাড়া, পশ্চিম পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বীপের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।
বিজ্ঞাপন
রোববার দুপুরের পর থেকে টেকনাফের সঙ্গে সেন্টমার্টিন দ্বীপের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
দ্বীপের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা আয়াত উল্লাহ কুমিনী বলেন, জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে। বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনি কখনো এখানে জোয়ারের পানি আসতে দেখেন নি। এলাকার লোকজন আতঙ্কে মধ্যে রয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। জোয়ারের কারণে পানি ঢুকে যাচ্ছে বসতঘরে। আকমলআলী সড়ক জেলেপাড়া, চট্টগ্রাম, ২৪ অক্টোবর
সেন্টমার্টিন ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সৈয়দ আলম বলেন, এবারের মতো আগে কখনো দ্বীপের মানুষ এত আতঙ্কে ছিল না। জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এলাকার লোকজন আশপাশের উঁচু ভবনগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। তবে ভাটার সময় হলে পানি আবার নেমে যাবে।
বিজ্ঞাপন
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বাড়ির পামের স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন দ্বীপের পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ। বাড়ির আঙিনায় হাঁটুসমান পানি উঠেছে বলে জানান তিনি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকেছে। এদিকে টেকনাফের সাবরাং মেরিন ড্রাইভ সড়কের শ্মশান এলাকার একটি অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সমস্যা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে মেরিন ড্রাইভের শ্মশান এলাকায় আছেন।
এদিকে, সিত্রাং আতঙ্কের মধ্যে টেকনাফে ঝড়ো হাওয়ায় নির্মাণাধীন তিনতলা ভবনের বড় একটি অংশ ধসে চারজন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত ও স্থানীয়দের বরাতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হঠাৎ নির্মাণাধীন ওই ভবনের বড় একটি অংশ ধসে পড়লে ভবনটির মালিকসহ চারজন আহত হন। তারা সবাই মালিকের ভাই-বোন ও ভবনটির অংশীদার। আহতরা নিজেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির মালিক আতাউর রহমান কায়সার বলেন, সোমবার বিকালে আকস্মিক দমকা হাওয়ার প্রভাবে বিকট শব্দে নির্মাণাধীন ভবনের বড় একটি অংশ ধসে পড়ে। এতে তিনিসহ তার আরও তিন স্বজন আহত হন। ঘটনার পর আহতরা সকলে কক্সবাজার শহরের ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রতিনিধি/এইচই