ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে উপকূলজুড়ে বেড়েছে বাতাসের গতি। একইসঙ্গে বেড়েছে বৃষ্টির পরিমাণ। মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও অনেকেই তা তোয়াক্কা করছেন না।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভোররাত থেকে লক্ষ্মীপুরে সর্বত্র মাঝারি ও ভারী আকারের বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকে ভাটা থাকার কারণে মেঘনা নদী শান্ত ছিল। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে জোয়ার আসতে শুরু করে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ খালগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। এতে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপদ সংকেত দেখানোর পর উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং ও পতাকা ঝুলানো হয়েছে। ইতিমধ্যে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রশাসন মাঠে নেমেছে। রেডক্রসের সদস্যরা সকাল থেকেই নদী তীরবর্তী এলাকা ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা প্রচারে কাজ করছেন। নদী তীরবর্তী বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
কমলনগরের উত্তর পশ্চিম চরমার্টিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ দেখা গেছে। ১৮৫টি প্রতিষ্ঠান আশ্রয়ণ কেন্দ্রের জন্য প্রস্তুত থাকলেও দুপুর পর্যন্ত কোথাও কোন মানুষ আশ্রয় নিতে আসেননি।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলা সদর, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলা মেঘনা নদী বেষ্টিত। এই চার উপজেলার মানুষকে ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এজন্য ৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এছাড়া ২৬০ মেট্টিক টিন চাল মজুদ রয়েছে। ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৬০০ প্যাকেট বিস্কুট ইতিমধ্যে উপজেলাভিত্তিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৬৬টি মেডিকেল টিমের সঙ্গে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৩ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক ইতিমধ্যে মাঠে কাজ করছেন। জেলা ও উপজেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত কর্মস্থল এলাকায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, চর আবদুল্লাহ মূল ভূখণ্ডের বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন। সেখানে প্রায় ৪০-৫০টি পরিবার রয়েছে। তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য নৌকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ উদ্ধার কর্মীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হবে। এছাড়া প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে আশ্রয়ন কেন্দ্রে আসতে বলা হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ ঢাকা মেইলকে জানান, দুর্গম চর থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের লোকজন মাঠে নেমে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়কালীন চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রয়েছে। আমিও নিজেও এখন মজুচৌধুরী ফেরিঘাট এলাকায় আছি।
প্রতিনিধি/এমআর











































































































































































