ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে দেশের দক্ষিণের দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সেন্টমার্টিন এলাকাজুড়ে গতকাল থেকেই বইছে ঝড়ো হাওয়া, সঙ্গে বৃষ্টিপাত। বাতাসের প্রভাবে বেড়েছে জোয়ারের উচ্চতা, সৃষ্টি হয়েছে জলোচ্ছ্বাসের।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর নাগাদ সেন্ট মার্টিন সমুদ্র সৈকতের এ চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় মাছধরা ট্রলার ও নৌকাকে আগেই তীরে নিয়ে আসা হয়েছে।
উপকূলে জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ের সঙ্গে বেড়ে চলেছে বাতাসের গতি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জোয়ারের উচ্চতা। ফলে উত্তাল রয়েছে সমুদ্র।
বাতাসের গতি প্রকৃতি বিষয়ক ওয়েবসাইট উইন্ডি ডটকমের তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের হলদিবাড়ি এবং বাংলাদেশের পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মাঝামাঝি বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। যা ক্রমেই বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। বাংলাদেশ উপকূলের হাতিয়া, সন্দ্বীপ হয়ে বরিশাল বিভাগের দিকে আছড়ে পড়তে পারে সিত্রাং। ঝড়ের প্রভাব পড়বে আশেপাশের অন্তত ১৯ জেলায়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান ঘূর্ণিঝড়টির।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি বরিশাল উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে দেশের চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৮ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৮ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
এর ফলে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে সাত (৭) নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ছয় (৬) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলসহ বেশিরভাগ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। আগামীকাল ভোরে এটি বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। যার মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে দেশের অন্তত ১৩ জেলায়।
কারই/এমএ