বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারাগারে পাঠানোর আবেদনে নেতাকর্মীদের বেআইনিভাবে জনতাবদ্ধ করা ছাড়াও দাঙ্গা-হাঙ্গামার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকার সিএমএম আদালতে বিএনপির শীর্ষ এই দুই নেতাকে হাজির ছাড়াও তাদের কারাগারে রাখার বিষয়ে এমন অভিযোগ এনেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা (মতিঝিল) তরিকুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
পল্টন থানার ১০ নম্বর মামলায় তাদের এ দিন আদালতে তোলা হয়। মামলায় ধারা ১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/ ৩৫৩/৪২৭/১০৯/৩৪ পেনাল কোডসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের ৩/৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ দিন আদালতে দেওয়া আবেদনে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক নিবেদন এই যে, সূত্রে বর্ণিত মামলার সন্দিগ্ধ গ্রেফতারকৃত আসামি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমীর (৭৪), পিতা-মির্জা রুহুল আমিন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব, সাং- হাউজ নং-২৩, রোড নং-১৭, সেক্টর-০৪, থানা-উত্তরা পশ্চিম, ডিএমপি, ঢাকা এবং ২ মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ (৭১), পিতা-আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য দক্ষিণ শাহজাহানপুর, থানা-শাহজাহানপুর, ডিএমপি, ঢাকাকে যথাযথ পুলিশ প্রহরায় আপনার আদালতে সোপর্দপূর্বক এই প্রতিবেদন দাখিল করিতেছি।’
এতে বলা হয়, ‘পল্টন মডেল থানাধীন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গত ০৭/১২/২২ইং তারিখ ১৪.৩৫ ঘটিকা হইতে ১৭.১৫ ঘটিকা পর্যন্ত বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেআইনি জনতাবদ্ধে দাঙ্গা হাঙ্গামা করতঃ বাঁশের লাঠি নিয়া সজ্জিত হয়ে পুলিশকে আক্রমণ ও বলপ্রয়োগ করে গুরুতর জখম করে এবং ক্ষতি সাধনের নিমিত্তে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ ব্যক্তি বা জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।’
আবেদনে আরও বলা হয়, ‘এই ঘটনায় উপ-পুলিশ কমিশনার মতিঝিল বিভাগ ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মতিঝিল জোনসহ অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধন হয়। মামলাটি তদন্তকালে বর্ণিত আসামিদ্বয় উক্ত ঘটনার পরিকল্পনাকারী, উস্কানিদাতা এবং নির্দেশদাতা বলিয়া প্রাথমিকভাবে জানা যাইতেছে। বিধায় আসামিদ্বয়কে ০৯/১২/২২ ইং তারিখ রাত ৩.০০ ঘটিকার সময়- বর্ণিত ঠিকানা হইতে গ্রেফতার করা হয়। মামলা সংক্রান্তে আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদ্বয়ের দেওয়া তথ্যাদি ও তাদের নাম ঠিকানা যাচাই করা হইতেছে। মামলা তদন্ত অব্যাহত আছে। অতএব, মামলা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বর্ণিত আসামিদ্বয়কে জেলহাজতে আটক রাখার প্রার্থনাসহ জামিনের বিরোধিতা করিলাম।’
বিজ্ঞাপন
>> আরও পড়ুন: ফখরুল-আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
উল্লেখ্য, শুক্রবার ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ দিন বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এই আদেশ দেন।
এর আগে একই দিন বিকেল ৪টার পর বিএনপির শীর্ষ এই দুই নেতাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত চত্বরে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে দুই নেতার জামিন প্রার্থনা করা হয়। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের রিমান্ড চাওয়া না হলেও কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানানো হয়। পরে শুনানি শেষে বিচারক রায় দেন।
এআইএম/আইএইচ