বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ, সমাবেশস্থল ছাপিয়ে রাস্তায় নেতাকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ, সমাবেশস্থল ছাপিয়ে রাস্তায় নেতাকর্মীরা
ছবি: ঢাকা মেইল

নয়াপল্টনে অনড় অবস্থানের পর দফায় দফায় আলোচনা শেষে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। তবে রয়েছে শর্তের বেড়াজাল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়ার সময়ে ডিএমপির জুড়ে দেওয়া ২৬ শর্ত এই মাঠেও সমাবেশে মানতে হবে বিএনপিকে। এই শর্ত মেনেই আগামীকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করতে যাচ্ছে দলটি।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে যাত্রাবাড়ীর সায়দাবাদের এই মাঠে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই দলে দলে বিএনপি নেতাকর্মীরা এই মাঠে আসতে শুরু করেছেন। এমনকি বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে রাজধানীর এই মাঠটি। সেই সঙ্গে সমাবেশস্থলে আসতে পেরে বেশ উৎফুল্লও দেখা গেছে নেতাকর্মীদের।


বিজ্ঞাপন


BNPএ দিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদও দলে দলে নেতাকর্মীদের সমাবেশস্থলে আসতে দেখা গেছে। এতে ক্ষণে ক্ষণে নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠছে গোলাপবাগ মাঠ। সবমিলিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মাঠে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের জড়ো হতে দেখা গেছে।

প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ, সাঁটানো হচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন

শেষ মুহূর্তে এসে সমাবেশস্থল ঠিক হওয়ায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্তও অন্ধকারে রয়েছে গোলাপবাগ মাঠ। সেই সঙ্গে টাঙানো হয়নি কোনো মাইক। তবে ইতোমধ্যেই লাইটিং ছাড়াও মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে। রাত সাড়ে ৭টার পর থেকে সমাবেশের মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে মাঠের চারপাশে সাঁটানো হচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন।

BNPসমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বিভাগীয় এই সমাবেশের লক্ষ্য- নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংস আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। পাশাপাশি বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতা ছাড়াও দেশের মানুষের জীবনযাত্রায় নাভিশ্বাস, বিএনপি নেত্রীকে গৃহে অন্তরীণ করে রাখার ইস্যুসহ নানা বিষয়ে নিয়ে সমাবেশে আলোচনা হবে।


বিজ্ঞাপন


অন্ধকারে বসে স্লোগান ও গান পরিবেশন করছেন নেতাকর্মীরা

আগে থেকে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় শুক্রবার সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে গোলাপবাগের মাঠজুড়ে। তবে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে মাঠে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গেছে। তবে বিকেলে সমাবেশস্থলের ঘোষণা আসার পর থেকে ইতোমধ্যেই মাঠে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের অন্ধকারেও বেশ উৎফুল্ল দেখা গেছে।

BNPমাঠে ছোট-বড় নানা গ্রুপের আকারে ঘাসের ওপর বসে সকালের অপেক্ষা করছেন তারা। এ সময় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ধরনের সরকারবিরোধী স্লোগান ছাড়াও গান পরিবেশন করতে দেখা যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাঠ ঘুরে সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মীদের মাঠের মধ্যে বসে সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। একইভাবে মাঠের চারদিকে গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বসে থাকা নেতাকর্মীদের ধ্বনিতেও উচ্চারিত হতে শোনা যায় নানা স্লোগান।

BNPএ বিষয়ে কথা হলে সিলেট জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মিনার হোসেন লিটন ঢাকা মেইলকে বলেন, সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পরপরই আমরা গোলাপবাগ মাঠে চলে আসি। তবে এখনো মাঠে কোনো লাইটের ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই অন্ধকারের মধ্যে আমরা মাঠে বসে আছি। মাঠে বসে সরকারবিরোধী গান ও স্লোগান দিয়ে কর্মীদের উজ্জীবিত করা হচ্ছে।

সময় গড়ানোর সঙ্গে বাড়ছে নেতাকর্মীর ঢল

শেষ মুহূর্তে সমাবেশস্থলের ঘোষণা আসলেও রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সময় গড়ানোর সঙ্গে বাড়ছে নেতাকর্মীদের ঢল। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সমাবেশস্থলে এসে যোগ দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। যারা ৩-৪ দিন আগেই ঢাকায় এসে বিভিন্ন জায়গায় ছিলেন, তারাও এখন গোলাপবাগ মাঠে এসে জড়ো হচ্ছেন।

BNPরাত পৌনে ৮টার দিকেও সরেজমিন ঘুরে ছোট-বড় নানা দলে বিভক্ত হয়ে স্লোগানের সঙ্গে নেতাকর্মীদের গোলাপবাগ মাঠে আসতে দেখা গেছে। বিকেলে ডিএমপি সমাবেশের অনুমতি দিলে এভাবেই দলে দলে বিএনপি নেতাকর্মীদের রিকশাযোগে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা যায়। আবার অনেকেই হেঁটে হেঁটেও আসেন সমাবেশস্থলে। জানা গেছে, মাঠের খোলা আকাশের নিচেই রাত্রি যাপন করবেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

বন্ধ হয়ে গেছে ধলপুর সড়ক

বিকেলের ঘোষণার পর ইতোমধ্যেই কানায় কানায় ভরে উঠেছে যাত্রাবাড়ীর সায়দাবাদের গোলাপবাগ মাঠ। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে মাঠে জড়ো হতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে মাঠের বাইরেও অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। এতে গোলাপবাগ মাঠ থেকে শুরু করে সায়দাবাদ-কমলাপুর সড়কের মানিকনগর পর্যন্ত মানুষের ঢল দেখা গেছে।

BNPএদিকে, মাঠ ছাপিয়ে নেতাকর্মীরা সড়কের আশপাশে অবস্থান নেওয়ায় সায়দাবাদের এই অংশে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। এতে অনেককেই গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতেও দেখা গেছে।

BNPউল্লেখ্য, জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ ছাড়াও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামের মাধ্যমে শুরু হয়ে ইতোমধ্যেই বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ শেষ করছে বিএনপি। আগামীকাল ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিএনপির পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি।

এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে যারা শরীক হতে যান তাদের সবাইকে আগামীকালের সমাবেশে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সেই সঙ্গে ঢাকাবাসীকেও সমাবেশে যোগ দেওয়া আহ্বান জানিয়েছে তিনি।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা জানিয়েছেন, আগামীকাল রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ শুরু হবে বেলা ১১টায়। এই সমাবেশ থেকে দলের পক্ষ থেকে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

কেআর/টিএই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর