রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর গ্রেফতার হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল জামিন পেয়েছেন। তবে পল্টন থানার এই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ বাকি সব বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিজভী-এ্যানীদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
বুধবারের (৭ ডিসেম্বর) ওই সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ পল্টন ও মতিঝিল থানায় দুটো মামলা করেছে। এরমধ্যে পল্টন থানার মামলায় ৪৭৩ জনকে এজাহারনামীয় আসামি ছাড়াও ১৫০০-২০০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আর মতিঝিল থানায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও শতাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের পক্ষ থেকে পল্টন থানার মামলায় ১৫ জন আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। এছাড়া মতিঝিল থানার আসামিদেরও ৭ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। তবে আদালত পল্টন থানার মামলায় ১৩ জন ছাড়াও মতিঝিল থানার ৯ জনসহ মোট ২২ জনকে দুদিন করে রিমান্ডে দেন।
এর আগে বিকেলে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে আসামিদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। এসব মামলার আসামিরা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ আরও চার শতাধিক নেতাকর্মী।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দলটিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও বিএনপি সেখানে সমাবেশ করবে না বলে জানিয়েছে। তৃতীয় কোনো ভেন্যুর বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠের কথাও আলোচনায় রয়েছে। এর মধ্যেই বুধবার সকাল থেকে নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন। পরে বিকেলের দিকে সেখানে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
ওই সময় নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে রায়টকার দিয়ে মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ আরও জোরাল হয়। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এই ঘটনায় মকবুল নামে একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত অনেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে, বুধবার বিকেলের ওই সংঘর্ষের পর নয়াপল্টন কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে একে একে অবরুদ্ধ নেতাদের আটক করা হয়।
বিইউ/আইএইচ