পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় আগামীকাল বিভাগীয় সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। প্রথম থেকেই নয়াপল্টনে এই সমাবেশ করতে চাইলেও রাস্তাঘাটে সমাবেশে ডিএমপির বাধায় সমাবেশস্থল নিয়ে দোটানায় পড়ে দলটি। এরপর ডিএমপির প্রস্তাবে উঠে আসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কথা। তবে সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বিএনপি, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা।
দফায় দফায় এ নিয়ে আলোচনার পর অবশেষে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, কমলাপুর স্টেডিয়ামে যেহেতু খেলা চলছে এবং কর্তৃপক্ষ আমাদের বলল অন্য একটা জায়গায় আপনারা বিবেচনা করতে পারেন। সেটার প্রেক্ষিতে আমরা গোলাপবাগ মাঠে আমাদের চয়েজ দিয়েছি এবং আমাদের চয়েজের প্রেক্ষিতে উনারা বলেছেন একটা লিখিতভাবে উনাদের কাছে দেওয়ার জন্য। সেটা আমরা দিয়েছি। ওই জায়গায় গণসমাবেশ করার জন্য উনারা আমাদেরকে বলেছেন। সার্বিক নিরাপত্তা বিধান গোলাপবাগ মাঠসহ আশেপাশের এলাকায় পুলিশ করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ হচ্ছে। আমাদের যেটা প্রত্যাশা ছিল যে আমরা কমলাপুর স্টেডিয়ামে করব। খেলার কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞাপন
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মীর্জা আব্বাসকে গ্রেফতারের বিষয়ে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এ বিষয়টি তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অংশ। সেটা আমরা আদালতে মোকাবিলা করব। আইনগতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সমাবেশের স্থান নির্ধারণে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠকে বসে বিএনপি। প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ওই বৈঠকের পর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু জানান তারা সমাবেশের জন্য নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে কমলাপুর স্টেডিয়ামের প্রস্তাব দিয়েছেন। আর ডিএমপির পক্ষ থেকে মিরপুরের বাঙলা কলেজ মাঠের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে ডিএমপির প্রস্তাব অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বাংলা কলেজের মাঠ পরিদর্শনে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুসহ একটি প্রতিনিধি দল। ওই সময় তারা কলেজ মাঠ ঘুরে দেখেন। সেই সঙ্গে মির্জা আব্বাস জানিয়েছিলেন, সমাবেশের জন্য কমলাপুর স্টেডিয়াম ও বাঙলা কলেজ মাঠ দুটোই তারা পরিদর্শন করেছেন। তবে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার পর স্থান চূড়ান্ত করা হবে।
এর আগে রাতে বিএনপির প্রতিনিধিদল বাঙলা কলেজ পরিদর্শনে আসছে- এমন খবরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কলেজ এলাকাজুড়ে। রাত ১১টায় সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন কলেজের সামনে। এ সময় তাদের একটি মিছিল টেকনিক্যাল মোড় এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে ঘণ্টাখানেক পর বিএনপির প্রতিনিধি দল বাঙলা কলেজ মাঠ পরিদর্শন করে।
এদিকে, প্রস্তাবিত দুই সমাবেশস্থল পরিদর্শনের পর রাত ৩টার দিকে খবর আসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে তাদের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। রাজধানীর উত্তরা ও শাহজানপুরের নিজ নিজ বাসা থেকে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
সবশেষ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেফতার দেখানোর কথা জানিয়েছেন। ডিবি প্রধান জানান, গত ৮ ডিসেম্বর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার উস্কানিদাতা ও পরিকল্পনার অভিযোগে করা ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এমই/আইএইচ
































































































































