টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত। এতে অংশ নেওয়া লাখ লাখ মুসল্লির ভোগান্তির শেষ নেই। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা কয়েক কিলোমিটার হেঁটে ইজতেমায় ময়দানে মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাত শেষে আবার কয়েক কিলোমিটার হেঁটে গন্তব্যে ফিরতে দেখা গেছে তাদের। তাদের সেবায় কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ক্লান্ত মুসল্লিদের লেবুর শরবত পান করান তারা। তাদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন মুসল্লিরা।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিন রাজধানীর উত্তরা এলাকায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, আর্মড পুলিশ সদস্যরা মুসল্লিদের শরবত পান করাচ্ছেন। তাদের মধ্যে এক সদস্য মাইকে শরবত পান করার জন্য মুসল্লিদের আহ্বান করছেন। আর বাকিরা মুসল্লিদের শরবত পানে ব্যস্ত রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, সকাল থেকেই মুসল্লিদের হাতে শরবত তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিকেল পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। তবে এতে কোনো মূল্য নেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে শরবত পান করে মুসল্লিরাও স্বস্তির কথা জানিয়েছেন। আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের এক মুসল্লি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাসা যাত্রাবাড়ী এলাকায়। আমি ভোরে নাস্তা না করেই আখেরি মোনাজাতে অংশ নিই। রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় অনেক জায়গা হেঁটে আসতে হয়েছে। কিন্তু মোনাজাত শেষ হওয়ার পরই একই অবস্থা। ইজতেমার আশপাশ এলাকার দোকানগুলোতে অনেক ভিড়। তাই নাস্তা করার সুযোগ হয়নি। তবে এখানে এসে দেখলাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাইকে ঘোষণা দিচ্ছে; শরবত পান করার জন্য। তাই শরবত পান করেছি। এতে অনেক স্বস্তি পেয়েছি।
পলাশ মিয়া নামের আরেক মুসল্লি ঢাকা মেইলকে বলেন, উত্তরা থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত রাস্তার পাশে খাবারের দোকান অনেক কম। আর বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের তেজও বেড়েছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শরবত পান করে স্বস্তি পেয়েছি।

বিজ্ঞাপন
এদিকে, আর্মড পুলিশের পাশাপাশি বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে দূর-দূরান্ত থেকে আগত ও ঘরমুখী মুসল্লিদের জন্য র্যাব ফোর্সেসের ব্যবস্থাপনায় ইজতেমাস্থল ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন পয়েন্টে বিশুদ্ধ পানি ও শরবতের সরবরাহ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ইজতেমা উপলক্ষে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় র্যাব ফোর্সেসের পর্যাপ্তসংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে র্যাব-১ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে র্যাব ফোর্সেস সদর দফতরসহ, ঢাকাস্থ অন্যান্য পাঁচটি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন রয়েছে। ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, র্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স, সাদা পোষাকে টহল ও চেকপোস্ট এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি মুসল্লিদের শরবত পান করানো হচ্ছে।
র্যাব আরও জানায়, আখেরি মোনাজাতে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য র্যাব কর্তৃক চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ওই চিকিৎসা কেন্দ্রে ইজতেমায় আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের তিন দিনে প্রায় তিন হাজার রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সবসময় বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতারসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ধর্মীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান ও দিবসে নিরাপত্তা প্রদান এবং বিভিন্ন সেবামূলক কাজের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব। এ ধারাবাহিকতায় আজ বিনামূল্যে লেবুর শরবত মুসল্লিদের দেওয়া হয়েছে।
কেআর/জেবি















































































































