বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘আল্লাহ ইজতেমায় অংশ নেওয়াইছে, এটাই বড় পাওয়া’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫৪ পিএম

শেয়ার করুন:

‘আল্লাহ ইজতেমায় অংশ নেওয়াইছে, এটাই বড় পাওয়া’

টাঙ্গাইল থেকে শনিবার রাতে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে আসেন হায়দার আলী। সঙ্গে ছিলেন আরও ১৫ জন। সবাই সোমবার পৌনে এগারোটায় ১২ নম্বর হয়ে একটি পিকআপ ফিরছিলেন। এ সময় কথা হয় হায়দারের সঙ্গে। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, আল্লাহ অংশ নেওয়াইছে, এটাই বড় পাওয়া।

তার কথা শেষ না হতেই গাড়িতে বসে থাকা জিল্লু সরকার বলে উঠলেন, দুইদিন খুব কষ্ট হইছে। কিন্তু মনে শান্তি আছিল। হুজুরের বয়ান শুনছি।


বিজ্ঞাপন


শুধু হায়দার আলী আর জিল্লু মিয়া নন, তাদের মতো লাখো মুসল্লি বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে এসেছিলেন। আখেরি মোনাজাত শেষে ঘরে ফেরা এসব মানুষের চোখে মুখে ছিল আনন্দের ছাপ।

সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ইজতেমায় আসেন সালাউদ্দিন সরকার। তিনি একটি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করেন। খুব ভোরে বাসা থেকে রওনা হয়ে ৯টায় উত্তরার প্রবেশপথে পৌঁছে সেখান থেকে আর যেতে পারেননি। পরে সকলের সঙ্গে তিনিও আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাত শেষে ফেরার পথে কথা হয় তার সঙ্গে।

সালাউদ্দিন সরকার‌ বলেন, মোনাজাতে যে কী প্রশান্তি তা বলে বোঝানো যাবে না। লাখ টাকা দিয়েও এই প্রশান্তি কেনা সম্ভব না। খুব ভালো লাগছে লাখ লাখ মুসল্লির সঙ্গে দোয়া-মোনাজাতে অংশ নিতে পেরে।

মোনাজাত শেষে ঘরে ফেরা মানুষদের বেশিরভাগ ছিলেন মধ্যবয়সী এবং বয়স্ক নারী ও পুরুষ।


বিজ্ঞাপন


পিকআপ ভ্যানগুলোতে দেখা গেছে, মোনাজাত শেষে গ্রামে ও বাসা বাড়ির দিকে ঘুরতে যাওয়া এসব মানুষের অনেকেই জিকির করতে করতে ফিরেছেন। রাস্তায় গাড়িতে জট ছিল। ছিল যানবাহন না পাওয়ার ভোগান্তি। কিন্তু সব ভোগান্তিকে উড়িয়ে দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেই ছিল সবার লক্ষ্য। তাইতো শীতের সাতসকালে হাজার হাজার মানুষ মিরপুর দিয়াবাড়ি হয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য ছুটছিলেন।

iztema-1

মিরপুরের কালশী থেকে এসেছিলেন ফরিদা বেগম। তিনিসহ তার এলাকার অন্তত ১০ জন নারী এসেছিলেন আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে। ফেরার পথে ১২ নম্বর সেক্টরের চৌরাস্তার মোড়ে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা।

ফরিদা বেগম বলেন, মেয়েদের জন্য বড় কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ বাংলাদেশে খুব কম। এ কারণে গতকাল থেকে বাসার আশপাশের ভাবিদের বুঝিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে এসেছিলাম।

মোনাজাত ধরতে পেরেছিলেন কিনা জানতে চাইলে ফরিদা বলেন, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মোনাজাত ধরেছি। জীবনের ভুলগুলো শুধরে সামনের জীবনকে আরও ভালো করতে চাই। আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করেছি‌‌।

মিরপুর এলাকা থেকে আসা ষাটোর্ধ্ব এনামুল হক ঢাকা মেইলকে জানান, প্রতিবছর তিনি বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে আসেন। এবারও ইজতেমায় অংশ নিতে গতরাতে এসেছেন। মোনাজাত শেষে তারা এখন বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। 

iztema-4

তিনি বলেন, আর কয়দিন বাঁচব। আজকের মোনাজাতে অংশ নিয়ে খুব প্রশান্তি লাগছে। এই মোনাজাতে যদি প্রতিদিন হতো!

মিরপুরের বাসা থেকে মোনাজাতে অংশ নিতে বের হয়েছিলেন লিটন সরকার। উত্তরা ১২ নম্বরে তার সঙ্গে কথা হয়। ঢাকা মেইলকে লিটন বলেন, মিরপুর যাব কোন রিকশা পাচ্ছি না। এখন তো অনেক ভিড়। এ কারণে বসে আছি। ‌তবে মোনাজাত ধরতে পেরেছি এটাই বড় পাওয়া।

এমআইকে/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর