বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ঘরে ফিরতেও সঙ্গ ছাড়েনি ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৫৪ এএম

শেয়ার করুন:

ঘরে ফিরতেও সঙ্গ ছাড়েনি ভোগান্তি

সকাল ১০টায় আখেরি মোনাজাত শুরুর কথা থাকলেও তার কয়েক ঘণ্টা আগেই তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না তুরাগ তীরের ইজতেমার মাঠে। মাঠ উপচে আশপাশের সড়কগুলোও লোকার‌ণ্য হয়ে যায়। নয়টার আগেই আব্দুল্লাপুর এলাকাতেও ঢল নামে মুসল্লিদের। সামনে এগোনো যাবে না বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে সড়কেই পাটি বা পত্রিকা বিছিয়ে দোয়া-দরুদ ও জিকির করতে থাকেন। আবার কেউ কেউ যানবাহনে বসে পড়েন মোনাজাতে অংশ নিতে।

সকাল ১০টায় মোনাজাত শুরুর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমিন আমিন ধনিতে মুখর হয়ে ওঠে ওই এলাকা। যা শেষ হয় ১০টা ২০ মিনিটে।


বিজ্ঞাপন


মোনাজাত শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় বাড়ি ফেরার যুদ্ধ। মোনাজাতের পরই উত্তরার প্রতিটি অলিগলি ও সড়কে ঢল নামে হাজারো মানুষের। যে যেভাবে পারছেন ভোগান্তিকে সঙ্গী করে দ্রুত উত্তরা এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করছেন।

iztema-3

তুরাগ মাঠ থেকে ফিরে যাওয়া এসব মানুষ পিকআপ ভ্যান ট্রাক বাস এবং নিজস্ব প্রাইভেটকারের ছুটছেন নিজ নিজ বাড়ির দিকে। এসব মানুষের অনেকে দোয়া দরুদ এবং আল্লাহ জিকির করছেন।

ঘরে ফেরা মানুষের তুলনায় যানবাহন কম থাকায় বেশিরভাগ মানুষই যানবাহনে উঠতে পারছেন না। যেসব গাড়ি চলাচল করছে সেগুলোতে যাত্রীতে ঠাসা। উপায় না পেয়ে ভোগান্তিকে সঙ্গী করে অনেকেই হেঁটে ঘরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন। আর যারা গাড়িতে চেপে বসেছেন তাদেরও পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।


বিজ্ঞাপন


গত শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। তিন দিনব্যাপী ইজতেমার শেষ দিন ছিল আজ। আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ এই আয়োজন।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই মোনাজাত শেষের পরই বাড়ির উদ্দেশে ছুটতে শুরু করায় পথে পথে মানুষের ঢল নেমেছে।

iztema-1ইজতেমার মূল প্যান্ডেল ঘিরে কয়েক বর্গ কিলোমিটার এলাকায় গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঘরে ফেরা মানুষ হেঁটে গাড়ির কাছে যান। দূর-দূরান্তের লোকজন ইজতেমা ময়দান থেকে গাড়ির নিকট ও কাছের মানুষগুলো বাড়ি ফিরতে শুরু করলে মহাসড়কে দেখা মেলে শুধু মানুষ আর মানুষ।

ঘরে ফেরা মানুষের ভিড়ের কারণে বাসের মতো তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না ট্রেন, নৌকাসহ অন্য যানবাহনেও। ইজতেমা মাঠ থেকে বেশ দূরে গিয়ে বাস, রিকশা, ভ্যান ইত্যাদি মিললেও সেখানে দেখা দেয় আরেক চিত্র। এসব স্থানে ছিল যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ। যদিও মানুষের তুলনায় এসব যানবাহনেও জায়গা পাওয়া মুশকিলই ছিল। এর ওপর এসব যানবাহনে, বিশেষ করে বাসগুলো অতিরিক্ত ২০ গুণ পর্যন্ত ভাড়া নিয়েছে।

একই অবস্থা রেল রুটেও। কোনো ট্রেনেই জায়গা ছিল না। ট্রেনের ভেতরে ও ছাদে জায়গা না পেয়ে অনেকে ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে বসেও নীড়ে ফিরছেন।

সকাল ১১টার দিকে রাজধানী সুপার সার্ভিস পরিবহনের চালক ময়না মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি আব্দুল্লাহপুর এলাকায় মোনাজাতে অংশ নেই। মোনাজাত শেষে বাসে যাত্রী তোলা শুরু করি। পরে মিরপুর ১২ নম্বরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি।

iztema-4

ট্রাফিক পুলিশ জানায়, আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে ডাইভারশন থাকায় উত্তরার দিকের বেশকিছু সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে মোনাজাত পরে ডাইভারশন তুলে দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মোনাজাত শেষে দলে দলে লোকজন হেঁটে বাড়ি ফিরছেন মুসল্লিরা।

গোলাম রহমান নামে এক মুসল্লি বলেন, মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর রাতে টঙ্গি আসি। এখন মোনাজাত শেষ হয়েছে। তাই বাসায় ফিরে যাচ্ছি।

কেআর/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর