চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাতাসে এখন দগ্ধ লাশের গন্ধ। প্রতিটি ঘর থেকে ভেসে আসছে স্বজনহারাদের আহাজারির শব্দ। এ যেন আরও একটি রানা প্লাজার পুনরাবৃত্তি।
শনিবার (৪ জুন) রাতের এই অগ্নিকাণ্ডে চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে আসে একের পর এক লাশ। হাসপাতালের প্রধান ফটক ও বারান্দায় ভিড় করছে স্বজনরা। হাতে ছবি নিয়ে প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তারা। বেশিরভাগ মানুষের মুখে প্রশ্ন এখন একটাই- আমার বাবা, ভাই, ছেলে-মেয়ে কিংবা স্বামী কই?
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএম ডিপোর এক কর্মকর্তা ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘২৬ একরের প্রোপার্টিতে প্রায় দুই হাজার ২০০টি কন্টেইনার রয়েছে। যেখানে বেশিরভাগ কন্টেইনারেই আছে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। আছে অন্যান্য কেমিক্যালও।’
এসময় আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কীভাবে হয়েছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে একজন কর্মী দৌড়ে এসে আমাদের বলে একটি কনটেইনারে আগুন লেগেছে। পরে আমরা দৌড়ে সেখানে যাই। সেখান থেকে আগুন লাগা কনটেইনারটি সরিয়ে ডিপোর প্রধান ফটকে নিয়ে রাখি। সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটে।’
মো. আরাফাত হোসেন। বিএম ডিপোর প্রধান ফটকের একটি হোটেলের কর্মচারী। তিনি খুব কাছ থেকেই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা দেখেছেন। ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘হঠাৎই একটি কনটেইনারে ধোঁয়া দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে তা পরিণত হয় আগুনে। পরে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তারা আগুন লাগা কনটেইনারটি গেটের কাছে রেখে যায়।
বিজ্ঞাপন
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগুন লাগার পরেও কর্তৃপক্ষ কোনো কর্মীকে বের হতে দেয়নি। কিছুক্ষণ পর বিস্ফোরণ হলে অনেকেই পুড়ে গেছে। অনেককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মিজানুর রহমান নামে এক গাড়িচালক বলেন, রাত ১১টার দিকে আমি ডিপোতে আসি। কিন্তু নয়টার দিকে আমার তিন সহকর্মী ডিপোতে ঢুকেছিল। তাদের একজন পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। বাকি দুজনের মধ্যে একজনের সঙ্গে ভোর ৪টা পর্যন্ত যোগাযোগ করা গেলেও এখন তার মোবাইল বন্ধ।
মিজানুর বলেন, আমি মরতে মরতে বেঁচে গেলাম। আল্লাহ রক্ষা করেছেন। বিস্ফোরণের আগ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু বিস্ফোরণের পর আর কোনো কিছু ঠিক নেই।
এইউ/জেবি