বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

একসঙ্গে এত পোড়া লাশ কখনও দেখেনি চট্টগ্রামবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০২২, ০৬:২০ পিএম

শেয়ার করুন:

একসঙ্গে এত পোড়া লাশ কখনও দেখেনি চট্টগ্রামবাসী
ছবি: সংগৃহীত

বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাতাসে এখন শুধু পোড়া লাশের গন্ধ। সময়ের ব্যবধানে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। এরই মধ্যে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে বিস্ফোরণস্থলে কর্মরত ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা। এরমধ্যে সাতজনই ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। তবে এ ঘটনায় আরও অসংখ্য লাশ পাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে- ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০০ জন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ২০ জন আগুন নেভাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে দগ্ধরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে অনেকেই এখনও নিখোঁজ আছেন।


বিজ্ঞাপন


Fire

বিপুল পরিমাণ ‘হাইড্রোজেন পারক্সাইড’ মজুত থাকায় ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এতে কনটেইনার ডিপোটির অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে। যদিও বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ জানতে ইতোমধ্যেই ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রধান করা হয়েছে পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিমকে। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. আনিসুর রহমান।

প্রায় ২৪ বছর আগে আমদানি-রফতানি পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য চট্টগ্রামে কনটেইনার ডিপো শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। সেখানে এই শিল্পের যাত্রা শুরুর পর এবারই প্রথম কোনো কনটেইনার ডিপোতে বড় এমন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (আইসিডি) চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ূম খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে এই শিল্পের যাত্রা শুরুর ২৪ বছরে এমন বড় দুর্ঘটনা আগে ঘটেনি। তবে এর আগে ডিপোতে ছোটখাটো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু সেসব ক্ষেত্রে খুব দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল।


বিজ্ঞাপন


Fire

ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা কেবল কনটেইনার ডিপোতেই প্রথম নয়, বরং পুরো চট্টগ্রামেই এমন বড় কোনো দুর্ঘটনা এবারই প্রথম দেখল চট্টগ্রামবাসী। এখানে এর আগে এমন বড় দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০১১ সালে। ওই বছরের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শেষে ট্রাকে করে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় ৪৪ জন স্কুলছাত্র নিহত হয়েছিল। একই দিনে ছেলের মৃত্যু শোকে মারা যান এক বাবাও।

সে সময় ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয় সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। ওইদিন আবু তোরাব হাইস্কুল মাঠে ছিল শুধু লাশের মিছিল। স্কুলজুড়েই ছিল সহপাঠী বন্ধুদের বুক ভাঙ্গা কান্না। এক সঙ্গে এত শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আজও কাঁদে সেখানকার মানুষ।

উল্লেখ্য, শনিবার (৪ জুন) রাত ১১টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ী ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আমদানিকৃত একটি কন্টেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে সেখানে থাকা একটি কনটেইনারে ‘হাইড্রোজেন পারক্সাইড’ রাসায়নিকের মজুত থাকায় দফায় দফায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সবমিলিয়ে অন্তত ৪ শতাধিক মানুষ দগ্ধ ও আহত হয়েছেন। তারা চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর