অগ্নিকাণ্ড থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনায় সবার আগে ডাক পড়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। কখনও অন্যের জানমাল রক্ষা করতে গিয়ে তাদেরও হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু অতীতের সব দুর্ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। কারণ, এ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৯ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর।
আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সহযোদ্ধাদের এমন আত্মত্যাগে একদিকে যেমন গর্ববোধ করছেন ফায়ার ফাইটাররা, অন্যদিকে সহকর্মীকে হারানোর চাপা কষ্টও তাদেরকে ব্যথিত করছে। এমন কষ্ট নিয়েই শনিবার রাতে লাগা আগুন পুরোপুরি নেভাতে এখনও নিরলসভাবে কাজ করছে ২৫টিরও বেশি ইউনিটের ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
এ বিষয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, দু’যুগের পেশাগত জীবনে একসঙ্গে এত সহকর্মীকে হারানোর ঘটনা ঘটেনি।
সাংবাদিকদের ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, 'প্রায় ২৫ বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করছি। এত বছরে কখনও এক দুর্ঘটনায় এত মৃত্যু প্রত্যক্ষ করিনি। এর আগেও অগ্নিনির্বাপণসহ নানা দুর্ঘটনায় জীবন বাজি রেখে লড়েছেন তারা।'
তিনি আরো বলেন, 'আমার জানা মতে, এর আগে কখনো একটি ঘটনায় এত অগ্নিনির্বাপক কর্মীর মৃত্যু হয়নি, এটা নজিরবিহীন।'
বিজ্ঞাপন

যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে মনিরুজ্জামান নামের একজন একটি ছোট্ট মেয়ে রেখে গেছেন। কথা ছিলো ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়ে আদরের কন্যাকে কোলে তুলে নেবেন। কিন্তু ওই সুযোগ আর হলো না।
তার সঙ্গে জীবন বাজি রেখে আগুন নেভানোর লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কুমিরা ফায়ার স্টেশনের ইমরান হোসেন, মিঠু দেওয়ান, সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের নিপন চাকমা, শাকিল তরফদার, রানা মিয়া ও আলাউদ্দিন আলীরও।
এদিকে ফায়ার ফাইটারদের এমন ত্যাগের প্রশংসা করেছেন নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ছবি, আগুন নেভাতে গিয়ে ক্লান্ত শরীরের ছবি পোস্ট করে শ্রদ্ধা জানান অনেকে।
অনেকে বলেছেন, বিপদে একটি ফোন কল পেয়ে যারা মানুষকে উদ্ধারে এগিয়ে যান, তারাই হলেন নির্ভীক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।
যারা হতাহত হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সরকারকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে।
বিইউ/এমইউ

















































































































