চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের একজনের বাড়ি শেরপুর জেলা সদরে। তার নাম রমজানুল ইসলাম রনি। তিনি শেরপুর সদরের চরশেরপুর ইউনিয়নের হেরুয়া বালুঘাটা গ্রামের দলিল লেখক আবুল আঙ্গুরের বড় ছেলে।
সরেজমিনে রনির বালুরঘাট বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্বজনরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না এমন মৃত্যু। তার আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন রনি। সর্বশেষ পোস্টিং ছিল সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে। রনি তার স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে ভাড়া থাকতো, বিস্ফোরণে নিহত হওয়ার পর স্ত্রী রুপা খাতুন মেডিকেলে তার পরনের গেঞ্জি দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন। তার বাবা কারাগারে থাকায় ছোট ভাই, চাচা আবুল কাশেম ও তার মা চট্টগ্রামে গিয়েছেন মরদেহ আনতে।
রনির চাচা চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মো. জামান মিয়া বলেন, আট মাস আগে বিয়ে করে রনি। শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে দায়িত্ব পালনে বাসা থেকে গেঞ্জি পরেই বেরিয়ে যায় সে। এরপর থেকে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোনে না পাওয়ায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বিকৃত লাশের মাঝে গেঞ্জি দেখে তার লাশ শনাক্ত করে স্ত্রী রূপা খাতুন।
রনির সত্তরোর্ধ দাদা ইউনুস আলী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমার বড় নাতি রনি। রনির টাকায় চলতো তাদের সংসার। ছোট নাতিদের পড়াশোনর খরচসহ সবকিছু রনি দেখতো। সেই রনিই এখন নেই। আগুনে পুড়ে মারা গেছে। আমার ছেলেটাও মিথ্যা মামলায় জেলে। কীভাবে কী করবো আমি, বুঝতেছি না।’
রনির চাচি বলেন, ‘বড় পুলাডার কামাই দিয়েই সংসারডা চলতো। বাপটাও মিথ্যা মামলায় জেলে। এহন আমগোর পুলাডা আগুনে পুইড়া মরে গেছে, লাশ আনতে গেছে।’ বলেই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন তিনি।
প্রতিনিধি/এএ