চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে সবার আগেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। চেষ্টা করতে থাকেন হতাহত কমিয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। কিন্তু আগুনের ভয়াবহতা বাড়তে থাকায় অগ্নিনির্বাপণে যোগ দেয় ২৫টি ইউনিট। নির্ঘুম রাত কাটে ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ স্বেচ্ছাসেবীদের। অন্যের জীবন বাঁচানোর এই চেষ্টায় নিজের জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সাত কর্মীকে।
শনিবার (৫ জুন) সকালে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সহকর্মীদের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
মাইন উদ্দিন বলেন, আগুনে ফায়ার সার্ভিসের সাতজন নিহত হয়েছেন। ২১ জন আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে চট্টগ্রাম সিএমএইচে ১৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মাইন উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি এখানে যোগ দিয়েছি মাত্র ১০-১২ দিন হবে। এর মধ্যে এমন একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল। আমার সহকর্মীসহ সাধারণ অনেক মানুষ মারা গেছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। আমি খুবই মর্মাহত। সবার জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি।
এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল মো. রেজাউল করিমও তাদের সাত কর্মীর মৃত্যুর বিষয়টি ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের মারা যাওয়া একজন কর্মীর স্বজন জানান, তার দুই বছরের একটি বাচ্চা আছে। বৃদ্ধ মা আছেন। কিছুদিন আগে তার বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবা মারা গেছেন। তাই সরকার যাতে এই পরিবারটির দিকে তাকায় সেজন্য অনুরোধ করছি। কারণ সে জানমান রক্ষার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। তবে নিহত ওই কর্মীর নাম পরিচয় জানা যায়নি।
বিজ্ঞাপন
আগুন লাগার পরই চট্টগ্রামের পাশাপাশি আশপাশের জেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের মোট ২৫টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক।
এদিকে শনিবার রাতে লাগা আগুন রোববার সকালেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফলে নতুন করে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ডাকা হয়েছে। সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষায়িত সদস্যদের চট্টগ্রাম নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক।
মাইন উদ্দিন বলেন, বিদেশে প্রশিক্ষিত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভেতরে ঢুকে আগুন নেভানোর কাজ করতে সক্ষম।
আগুন পুরোপুরি নেভাতে সময় লাগবে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি আগুন নেভাতে, হতাহত কমাতে। অন্যদিকে কেমিক্যাল যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেটি নিশ্চিত করতে। আশা করি যেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি তাতে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ নেই।
বিইউ/এমআর