শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রস্তাবিত বাজেট জনগণের জন্য নয়: মঈন খান 

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯ জুন ২০২২, ০৭:২৯ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রস্তাবিত বাজেট জনগণের জন্য নয়: মঈন খান 

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট জনগণের জন্য নয় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, এবারের বাজেট বর্তমান কঠিন সময়ের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ একটি বাস্তবতা বর্জিত একটি বাজেট, কেবলমাত্র সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের জন্যই করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। 


বিজ্ঞাপন


আব্দুল মঈন খান বলেন, জন প্রতিনিধিত্ব বিহীন এই সরকার  দেশের কোটি কোটি দরিদ্র  মানুষের কোভিড পরবর্তী চরম মূল্যস্ফীতি জনিত দুঃসহ জীবনযাপন ও দৈনন্দিন সংগ্রামের বিষয়টি সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে এমন একটি বাজেট উপস্থাপন করেছে যা দেশের মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষায় তৎপর হয়েছে। অবাক হবার কিছু নেই, এতে করে লাভবান হবে সরকার সংশ্লিষ্ট একটি বিশেষ গোষ্ঠী। অন্যদিকে নতুন বাজেটের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আরও চরম অবস্থায় পতিত হবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী। 

তিনি বলেন, বাজেটের আকার বেড়েছে সন্দেহ নেই, কিন্ত এই ঢাউস বাজেটের যে দিকটি সরাসরি দেখা যায় না সেটা হচ্ছে, অবাধ মুদ্রা সরবরাহের বিষয়টি। কেউ জানে না, বাংলাদেশ ব্যাংক কত নতুন নতুন নোট ছাপিয়ে বাজার ছয়লাব করে দিচ্ছে, যার ফলশ্রুতিতে সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর অর্থনীতিতে জনগণের ত্রাহি  ত্রাহি অবস্থা। ইনফ্লেশন সরকারী হিসেবে ৬ শতাংশ এর কিছু ওপরে কিন্তু বাস্তবে সেটা ১২ শতাংশ, অর্থাৎ সরকারী হিসেবের  দ্বিগুন। বর্তমান বছরের বাজেটের ফলে এই পরিস্থিতি আরও নাজুক আকার ধারণ করবে । এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে হয়, ডলারের বিপরীতে স্বল্পতম সময়ে টাকার মারাত্মক অবমূল্যায়ন ও দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্দ্ধগতি জনজীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। এই বাজেটে তার কোনও সমাধান নেই। 

বিএনপির নীতিনির্ধারক বলেন, বাজেট ঘাটতি বিষয়টি লক্ষ্য করুন। ৩৬%, অর্থাৎ এক তৃতীয়াংশেরও বেশী। ফলে সরকারের দেশী বিদেশী ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের বিষয়টি নাই বা ব্যখ্যা করলাম। এর চাপও কিন্তু দরিদ্র জনগণের ওপরেই পড়বে। 

আবদুল মঈন খান আরও বলেন, নতুন ট্যাক্স আরোপের বিষয়টি লক্ষ্য করুন। কর্পোরেট ট্যাক্স কমেছে, কিন্ত ট্যাক্স ফ্রী তিন লক্ষ টাকার সীমা এক টাকাও বাড়েনি। 


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, দরিদ্র দেশের একটি বাজেটের মৌলিক দিক হল উন্নয়ন বাজেট বনাম রাজস্ব বাজেটের অনুপাত। আমরা দেখছি, একদিকে উন্নয়ন বাজেটের সিংহ ভাগ নিয়েছে ভৌত অবকাঠামোর মেগা প্রজেক্টগুলো। সাথে সাথে আশংকা হচ্ছে মেগা দুর্নীতির। কাজেই অধিকতর ব্যাখ্যায় না যাওয়াই হয়তো উত্তম। পাশাপাশি অনুন্নয়ন ব্যয় অথবা এখন যাকে অন্য নামে বলা হয় পরিচালনা ব্যয়, তার পরিমাণ ৪ লক্ষ কোটির ওপর। রাজনৈতিক সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রশাসন ও সাপোর্ট সিস্টেমকে খুশি রাখতে হবে তো ! 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বাজেটে বিরাট অংকের ভর্তুকি। লক্ষ কোটি টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো কার পকেটে যায় ? আমরা অতীতে দেখেছি, কিভাবে একই টেলিফোন নাম্বারে কতবার প্রণোদনা যায়, কার কাছে যায় ! এগুলো এখন মানুষের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন আসবে, বিগত দুই বছরে যে লক্ষ হাজার কোটি টাকার ওপরে প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল সে টাকা গেল কই ? তার মধ্যে একটি টাকাও কি পরিশোধ করা হয়েছে ? জনগণ জানতে চায়। শুনি, রফতানি না কি হু হু করে বাড়ছে। তাহলে প্রণোদনার টাকা পরিশোধ হচ্ছে না কেন ? কারা কারা এই প্রণোদনা পেয়েছে ও কি পরিমাণ পরিশোধ করেছে, তার ওপরে সরকারের শ্বেতপত্র চায় জনগণ। 

এমই/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর