মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘শিশুদের জন্য বাজেটের চেয়ে বড় প্রয়োজন খরচের সক্ষমতা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২২, ০১:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

‘শিশুদের জন্য বাজেটের চেয়ে বড় প্রয়োজন খরচের সক্ষমতা’

জাতীয় বাজেটে শিশুদের জন্য বাজেটের পরিমাণ বাড়ানোর চেয়েও সংশ্লিষ্ট খাতে খরচ করার সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড . শামসুল আলম।

সোমবার (২৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ভিআইপি লাউঞ্জে চিলড্রেন অ্যাফেয়ার্স জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (সিএজেএন) ও আরবান প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বাজেটপরবর্তী ‘শিশুর জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ জরুরি’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এই মত দেন।


বিজ্ঞাপন


পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার শিশু বাজেট তৈরি শুরু করেছিল। আমি অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবো। শিশুদের সার্বিক কল্যাণে অবশ্যই পৃথক বাজেট ঘোষণা করা উচিত।

ড. শামসুল আলম বলেন, ১৫টি মন্ত্রণালয় শিশুদের নিয়ে কাজ করে। এবারও আমরা দেখেছি, ধর্ম মন্ত্রণালয় মাত্র বাজেট খরচ করতে পেরেছে। দেখা যায় বাজেটে খরচ হয় না, সর্বোচ্চ ৮৫ থেকে ৮৬ শতাংশ খরচ করতে পারে। সুতরাং বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো থেকেও বড় প্রয়োজন বাস্তবায়ন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বছরে আমরা সংশোধিত বাজেট করে থাকি। এটাও করা উচিত নয়। যা ঘোষণা হয়েছে তাই বাস্তবায়ন প্রয়োজন। আমাদের দেশে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় রয়েছে। শুধু শিশু মন্ত্রণালয় হতে পারে না। একজন শিশু তো মন্ত্রী হতে পারে। এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী থাকেন মহিলা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শবনব জাহান শিলা বলেন, শিশুদের নিয়ে কাজ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শিশুবান্ধব। তিনি শিশুদের নিয়ে ভাবেন এবং কাজ করেন। আমাদের দেশ জনবহুল, কিন্তু সরকার তার মধ্যে থেকে কাজ করছে। প্রতিটি স্কুলে রাসেল ডিজিটাল ল্যাব করা হচ্ছে।  


বিজ্ঞাপন


শবনব জাহান শিলা বলেন, আমাদের শিশুদের নিয়ে মন্ত্রণালয় নেই, তারপরও সরকার কাজ করছে। এখন শিশুদের বলা হচ্ছে, পড়াশোনা করতে হবে। শুধুই পড়াশোনা। অন্য দিকে আমাদের ছোটবেলায় আমরা খেলার মাঠে ছিলাম। পরিবার থেকে শিশুদের খেলার সুযোগ দিতে হবে। এবারও শিশুদের জন ২৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা দেখি এনজিও বরাদ্দ নিচ্ছে, পরবর্তী সময়ে দেখা যায় এ নামে কোনো এনজিওরই অস্তিত্ব নেই। এছাড়াও শিশুদের নিয়ে বাজেট দেওয়া হয়, কিন্তু পরবর্তী সময়ে শিশুদের সম্পৃক্ত করা যায় না বলেই পরবর্তী বাজেটে তা আর হয় না।

দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, যদি আমাদের ভিশন থাকে, কাজের ক্ষেত্রে টাকার অভাব হয় না। পদ্মা সেতু তার একটা উদাহরণ। এজন্য অর্থ বরাদ্দর বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাই না। যেহেতু রাজনৈতিক দল সরকার নিয়ন্ত্রণ করে, এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার থাকা দরকার।

সাইফুল আলম বলেন, আমাদের দেশে পশুদের জন্য মন্ত্রণালয় থাকে, কিন্তু শিশুদের জন্য কেন মন্ত্রণালয় হবে না? আমাদের প্রয়োজন একটি শিশু মন্ত্রণালয়ের। যেখানে আলাদা বাজেট হবে। এছাড়াও এখন বৈষম্য দেখা যাচ্ছে, একটা শ্রেণি ধনী হচ্ছে, একটা শ্রেণি অসহায়। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগে, আমরা শিশুদের জন্য কী করছি? আমাদের শিশুদের সুকুমারবৃত্তি নিয়ে কাজ করতে হবে।

budget2

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর একটি বড় অংশ শিশু পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। এবারের বাজেটে এ বিষয়ে খুব একটা গুরুত্ব পায়নি। এছাড়াও শুদের ইন্টারনেটে পর্নো সাইডের বিস্তার রোধে পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। এছাড়াও যে মন্ত্রণালয়গুলো শিশুদের নিয়ে কাজ করে, খেখানেও বাজেটের পরিমাণ বাড়েনি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের অধ্যাপক আবু ইউসুফ।

অধ্যাপক আবু ইউসুফ বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট নিয়ে প্রতি বছর ফেরত যায়। এর জন্য বাজেটে খরচ করার সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। যেখানে শিশু এবং নারীদের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

আলোচকরা ২০২২-২৩ এবং ২০২১-২২ বাজেটেরে ওপর তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরে শিশু অধিকারের যে যে ক্ষেত্রসমূহে বাজেট বরাদ্দ তুলনামুলকভাবে কম সুপারিশসহ সেসব ক্ষেত্রসমূহে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

ডিএইচডি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর