বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

পোশাক খাতে উৎসে কর ৫ বছর না বাড়ানোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২২, ০৩:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

পোশাক খাতে উৎসে কর ৫ বছর না বাড়ানোর দাবি

প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে পোশাক শিল্পের উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই অবস্থায় আগামী পাঁচ বছর উৎসে কর না বাড়িয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ রাখার দাবি জানিয়েছে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

সোমবার (১৩ জুন) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট এবং সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান। এসময় সংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন


বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, 'প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক রফতানির ওপর উৎসে কর ০.৫০% থেকে বাড়িয়ে ১.০০% করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শিল্পের জন্য অত্যন্ত দুরূহ হবে। যখন কি না শিল্প মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, আমরা মনে করি কর বাড়ানোর জন্য এটি সঠিক সময় নয়। বর্তমানে অস্থিরতাময় বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতি আমাদের পোশাক শিল্পের জন্যও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তাই আমরা মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই উৎসে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব পোশাক শিল্পের টিকে থাকার সংগ্রামটি আরও কঠিন করে তুলবে।'

ফারুক হাসান বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে একদিকে যেমন জ্বালানি তেলসহ খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে ইউরোপসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে অর্থনৈতিক মন্দার আশংকাও বাড়ছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশগুলো সুদের হার বাড়াচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা কমেছে এবং সামনে আরও কমে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে পোশাক শিল্পে উৎসে কর বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, সে অবস্থায় রাখার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী সুবিবেচনায় রাখবেন। আমাদের একান্ত অনুরোধ, রফতানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখলে শিল্পটি বর্তমান সংকটকাল স্বস্তিতে থাকবে। শিল্প টিকে থাকলে রাজস্ব আসবে, নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

garment


বিজ্ঞাপন


যুক্তি দেখিয়ে তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমাদের পোশাক রফতানি ছিল ২৭.৯৫ বিলিয়ন ডলার, ৮৩.৪৫ টাকা এক্সচেঞ্জ রেট হিসেবে টাকার অংকে রফতানি আয় হয়েছিল দুই লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে উৎসে এক হাজার ১৬৬ কোটি টাকা উৎসে কর প্রদান করা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে রফতানি ছিল ৩১.৪৫ বিলিয়ন ডলার, ৮৩.৯৫ টাকা এক্সচেঞ্জ রেট হিসেবে টাকার অংকে রফতানি আয় হয়েছিল দুই লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে উৎসে এক হাজার ৩২০ কোটি টাকা উৎসে কর প্রদান করা হয়। আর চলতি অর্থবছর ২০২১-২২ শেষে রফতানি ৪১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করছি, ৮৭ টাকা এক্সচেঞ্জ রেট হিসেবে টাকার অংকে রফতানি আয় হবে তিন লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে উৎসে এক হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা উৎসে কর প্রদান করা হবে। আর সামনের অর্থবছর ২০২২-২৩ এ আমরা যদি ৪৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি করতে পারি তবে ৯২ টাকা এক্সচেঞ্জ রেট হিসেবে টাকার অংকে রফতানি হবে চার লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে উৎসে দুই হাজার ৭০ কোটি টাকা উৎসে কর প্রদান করা হবে। অর্থাৎ আমরা যদি প্রতিযোগী সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রফতানি বাড়াতে পারি, তাহলে কর হার না বাড়িয়েও রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব হবে। এতে করে সামষ্টিক অর্থনীতি উপকৃত হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরির অন্যতম উপাদান সোলার প্যানেল আমদানিতে শুল্কহার শূন্য থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। শিল্পে পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি সূচিত হয়েছে, তার ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমাদের অনুরোধ, সোলার প্যানেল আমদানিতে শুল্কহার শূন্য করা হোক।

ফারুক বলেন, অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের সামগ্রিক অবদানের কথা বিবেচনা পোশাক শিল্পে উৎসে কর বর্তমানের ন্যায় দশমিক ৫০ শতাংশ করা হলে অর্থনীতি উপকৃত হবে। আমরা আশা করছি সরকার এই সুপারিশটি সদয়ভাবে বিবেচনা করবে।

টিএ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর