শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

পুঁজিবাজার গতিশীল করতে ডিএসইর ৬ প্রণোদনা প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২২, ০৭:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

পুঁজিবাজার গতিশীল করতে ডিএসইর ৬ প্রণোদনা প্রস্তাব

দেশের পুঁজিবাজারকে আরও বিকশিত ও গতিশীল করতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ছয়টি প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- বন্ডবাজার সম্প্রসারণ; করপোরেট করহার হ্রাসকরণ; তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশের করমুক্ত সীমাবৃদ্ধিকরণ; এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার হ্রাসকরণ; প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর হ্রাস ও স্টক এক্সচেঞ্জে ট্রেকহোল্ডারদের উৎসে কর হ্রাস।

সোমবার (১৩ জুন) বাজেট ঘোষণাপরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূইয়া, শেয়ারহোল্ডার পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান ও শরীফ আনোয়ার হোসেন এবং ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সাইফুর রহমান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে অন্যসব খাতের মতো অর্থনীতির চালিকাশক্তি দেশের পুঁজিবাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই পুঁজিবাজারকে আরও বিকশিত ও গতিশীল করতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ডিএসই সরকারের কাছে ছয়টি প্রণোদনার দাবি জানায়।

ইউনুসুর রহমান বলেন, একটি স্বতন্ত্র বন্ড মার্কেট তৈরির জন্য রেগুলেটরি এবং টেকনোলজিক্যাল কাঠামো সম্পূর্ণভাবে তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে করপোরেট বন্ড মার্কেটের আকার খুবই ছোট। আমরা মনে করি একটি সময়োপযোগী নীতি সহায়তার মাধ্যমে কার্যকর বন্ড মার্কেট তৈরি করা গেলে দেশের শেয়ারবাজার তথা সামগ্রিক অর্থনীতি উপকৃত হবে। সেজন্য জিরো কুপন বন্ডের মতো সব ধরনের করপোরেট বন্ডের উদ্ভূত সুদ বিনিয়োগকারীরা নির্বিশেষে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব জানায়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হলে ওই তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। পুঁজিবাজারের টেকসই সম্প্রসারণের জন্য তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়।


বিজ্ঞাপন


পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ৫০ হাজার থেকে ন্যূনতম এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব জানানো হয়েছে। পাশাপাশি লভ্যাংশ থেকে উৎসে কর চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচনা করার দাবি জানানো হয়।

২০২১ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এসএমই বোর্ড নামে একটি আলাদা বোর্ড চালু করে। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকে বাজারে তালিকাভুক্ত করে দীর্ঘমেয়াদী মূলধন যোগান ও করপোরেট গভর্ন্যান্স উন্নত করা। এই বোর্ডে কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করার জন্য ন্যূনতম ৫ বছরের জন্য ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে কর ধার্য করার দাবি জানানো হয়।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো কর পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দেয়। লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর প্রকৃতপক্ষে দ্বৈত কর। এজন্য করপোরেট শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে করপোরেট করদাতাদের ক্ষেত্রে লভ্যাংশ আয়ের উপর চূড়ান্ত করহার ১০ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়েছে।

পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে ব্রোকারেজ হাউজকে ন্যায়সঙ্গত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে বিদ্যমান অযৌক্তিক করনীতি থেকে অবমুক্তি দিয়ে সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর দেওয়া অগ্রিম আয়কর শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ০১৫ শতাংশ (আগে এটি ০.০১২৫ শতাংশ ছিল) করতে অথবা আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী নিয়মিত হারে আয়কর দেওয়ার আদেশ জারি ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

ডিএসই মনে করে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, উন্নয়ন ও উৎপাদনমুখী কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করার কৌশল নিয়ে প্রস্তাবিত বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে উন্নয়ন ও উৎপাদনমুখী যে সুপরিকল্পিত কর্মপন্থা, ব্যবসাবান্ধব ও ব্যবস্থাপনা কৌশল বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেজন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বাজেট প্রস্তাবনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশে সরকারের নীতি সহায়তা ও বাজারবান্ধব আইন প্রণয়নের ফলে দেশের বাজার এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর হলে সেই তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য কর হার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের বৃহৎ এবং স্বনামধন্য কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে। এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

টিএ/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর