শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯ জুন ২০২২, ০৭:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ

আগামী অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট বক্তব্য উপস্থাপনকালে এই তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী। বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় বৃদ্ধকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের অঙ্গীকার করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে সরকার কর্তৃক প্রণীত জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে একটি ব্যাপকভিত্তিক সমন্বিত অংশগ্রহণমূলক পেনশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছিল।


বিজ্ঞাপন


মুস্তফা কামাল বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে আমি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিচ্ছি যে, সরকার আগামী অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শ্রম বাজারের ৮৫ শতাংশ জনবলই অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত এবং প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামো না থাকায় বৃদ্ধকালে তাদের জীবনযাপনে অনিশ্চয়তা দেখার সম্ভাবনা থাকে। ২০০০ সালে দেশের শ্রমশক্তির সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৭ লক্ষ যা ২০১৮ সালে ৬ কোটি ৩৫ লক্ষে পৌঁছেছে। ২০০০ সালে প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ২৮.৬ লক্ষ যা ২০১৮ সালে ৯০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশে ষাটোর্ধ্ব জনসংখ্যা ছিল ১.২০ কোটি যা ২০৪১ সালে ৩.১০ কোটি এবং ২০৬১ সালে ৫.৫৭ কোটিতে দাঁড়াবে। প্রত্যাশিত গড় আয়ু বর্তমানে ৭৩ বছর যা ২০৫০ সালে ৭৯.৯ বছর এবং ২০৭৫ সালে ৮৪.৩ বছর হবে। আগামী তিন দশকে অবসরের পরও ২০ বছর আয়ু থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে নির্ভরশীলতার হার ৭.৭ শতাংশ যা ২০৫০ সালে ২৪.০ শতাংশ এবং ২০৭৫ সালে ৪৮ শতাংশে উন্নীত হবে। প্রত্যাশিত গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ধীরে ধীরে বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়তে থাকবে। আমাদের দেশে একান্নবর্তী পরিবারের মাধ্যমে বয়স্ক ব্যক্তিবর্গের জন্য গ্রামে যে সামাজিক সুরক্ষাসহ নিরাপত্তাবলয় ছিল তা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। একক পরিবারে বসবাস বৃদ্ধি পাবার কারণে বয়োবৃদ্ধদের নিরাপত্তা ক্রমান্বয়ে হুমকির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বাজেট বক্তৃতায় মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অনেক বেশি বিধায় একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু করাটা এখন সময়ের দাবি। সরকার বয়স্ক ও দুঃস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় সামাজিক সুরক্ষাকল্পে প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ সুবিধাভোগীকে সহায়তা প্রদান করছে। সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারকে বিবেচনায় নিয়ে বয়স্ক ও দুঃস্থ জনসাধারণের জন্য একটি টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’ প্রণয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আইনের খসড়াও ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০২২ সালের মধ্যেই উল্লিখিত আইনটি মহান জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে- ইনশাল্লাহ। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হলে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের বিপুল জনগোষ্ঠী প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের অন্তর্ভু্ক্ত হবে। ফলে, ভবিষ্যতে বর্তমানে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম ধীরে ধীরে সংকুচিত করে আনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।


বিজ্ঞাপন


ডব্লিউএইচ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর