শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বাজেটে নতুনত্ব নেই, ধারাবাহিকতা রক্ষার চেষ্টা 

বোরহান উদ্দিন
প্রকাশিত: ০৯ জুন ২০২২, ১০:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

বাজেটে নতুনত্ব নেই, ধারাবাহিকতা রক্ষার চেষ্টা 

প্রস্তাবিত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে কোনো নতুনত্ব নেই। এটি ধারাবাহিকতা রক্ষার বাজেট বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা।

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এমনটা জানিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ।


বিজ্ঞাপন


কেমন হলো এবারের বাজেট- এমন প্রশ্নের জবাবে সায়মা হক বিদিশা বলেন, আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সামস্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও মূল্যস্ফীতির বিষয়টা। সেদিক থেকে সামস্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য রপ্তানিখাতকে বিভিন্ন প্রণোদনা, সাহায্য দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমদানিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হয়েছে। এরমাধ্যমে সামস্টিক অর্থনীতির এক ধরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো পলিসি আমরা দেখতে পাই তা না। যেই ধরণের রেগুলেটরি ডিউটি, কাটছাঁট কিছু করার বিষয়গুলো ছিল আগের বাজেটে তার ধারাবাহিকতা এবারও রক্ষা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যে বড় কোনো পরিবর্তন সেটা লক্ষ্য করছি না।

এই বাজেটকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বাজেটে নতুনত্ব তেমন দেখছি না। যেমন ধরুন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে কিন্তু গতানুগতিক ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বলা যেতে পারে আগের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় সংখ্যায় পরিবর্তন এসেছে। 

কিছু কিছু জায়গায় বড় ধরণের পরিবর্তন দরকার এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, যেমন আয়কর খাতে বড় ধরণের পুনর্গঠন দরকার। না হলে আমাদের যে রাজস্ব আয়, যেসব খরচ, ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সেসব জায়গায় ব্যালেন্স করতে হলে আমাদের কিন্তু আয়কর খাতে বড় পুনর্গঠন লাগবেই।


বিজ্ঞাপন


টিআইএনধারীদের রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবকে কিভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে সায়মা হক বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য ভালো কাজ হবে যেমন- টিআইনধারীদের রিটার্ন দেয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এটা ভালো জিনিস। এতে করে ৭৫ লাখ টিআইএনধারী যারা আছেন তাদের করের আওতায় আনার একটা চেষ্টা, এটা ভালো উদ্যোগ।

এছাড়াও কৃষিখাতে আরো ভর্তুকি বাড়ানো হয়েছে এটা ভালো উদ্যোগ। স্মার্টআপ ক্ষেত্রেও যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে সেটাও বলবো ভালো। 

তবে সার্বিকভাবে যদি বলি এই বাজেটে নতুনত্বের কিছু নেই। ধারাবাহিকতার বাজেট। এখানে বিশেষ করে যেটার দরকার ছিলো সেটা হলো মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থান তৈরি। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার জন্য কিছু পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়েছে, সামস্টিক অর্থনীতির জন্যও কিছু চেষ্টা করা হয়েছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে মোটা দাগে কিছু কর্মসূচির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যেটা বলা হয়েছে ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ দিয়ে কর্মসংস্থানের সেই ধরণের দিক নির্দেশনা দেখি না।  

তিনি বলেন, ধারাবাহিক বাজেটে বড় ধরণের পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে বাজেটে ব্যবসা ও শিল্পায়নকে উৎসাহিত করার জন্য দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রণোদনাসহ বেশ কিছু খাত রয়েছে। বাজেট বড় হলেও আরো বড় আকারের হওয়া সমস্যার নয় বলেও মনে করেন এই অধ্যাপক।

বিদেশে পাচার হওয়া টাকা কর দিয়ে ফেরত আনার প্রস্তাবকে কিভাবে দেখছেন- এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, কালো টাকা সাদা করা বলেন, আর বিদেশ থেকে কম মওকুফ করে টাকা আনার আমি পক্ষে না। এটা নৈতিকতার বিচারে, অর্থনৈতিক সুবিধার দিক থেকে বলুন কোনভাবে এটা সমর্থনযোগ্য নয়। বরং এটা সৎ উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করে।

বিইউ/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর