হজ ও ওমরার অন্যতম ফরজ ‘ইহরাম’ বাঁধার পর কিছু কাজ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এর একটি হলো সুগন্ধি ব্যবহার। অর্থাৎ ইহরাম বাঁধার পরে কোনোরকম সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না। হজরত ইয়ালা ইবনে উমাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) যখন জিঈররানা নামক স্থানে অবতরণ করলেন, তখন এক ব্যক্তি তার কাছে এলেন, যার পরনে ছিল জাফরান মিশ্রিত এক ধরনের সুগন্ধযুক্ত জুব্বা।.. রাসুলুল্লাহ (স.) তাকে বললেন, সুগন্ধির চিহ্ন দূর কর এবং জুব্বা খুলে ফেল।’ (সহিহ মুসলিম: ১/৩৭৩)
তাই মাসয়ালা হলো— হজে গিয়ে সুগন্ধযুক্ত তেল, জয়তুন ও তিলের তেলও লাগানো যাবে না। সুগন্ধি সাবান, পাউডার, স্নো, ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। বিখ্যাত তাবেয়ি আতা (রহ.) বলেন, ‘ইহরামকারী তার শরীরে কিংবা কাপড়ে সুগন্ধযুক্ত তেল লাগালে তার ওপর কাফফারা ওয়াজিব হবে।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ১৪৮৩৩)
বিজ্ঞাপন
এমনকি ইহরাম বাঁধা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে ফল-ফুলের ঘ্রাণ নেওয়াও মাকরুহ। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) মুহরিমের জন্য ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ১৪৮২৭)
আরও পড়ুন
নারীর হজ ফরজ হওয়ার শর্ত ও বিশেষ মাসায়েল
হজের বিধান, ফজিলত ও না করার পরিণাম
আবুজ জুবাইর (রহ.) বলেন, আমি জাবির (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ইহরামকারী কি ফুল বা সুগন্ধি শুঁকতে পারে? তিনি বললেন, না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ১৪৮২৮)
তবে যদি সাবান বা শ্যাম্পু এমন হয় যে তাতে কোনো গন্ধ নেই, এর দ্বারা মাথার উকুন ইত্যাদিও মরে না, তাহলে এমন সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে। (আনওয়ারে মানাসিক: ২২৯)
বিজ্ঞাপন
যেহেতু গন্ধহীন সাবান শ্যাম্পু সাধারণত পাওয়া যায় না, তাই সতর্কতা হলো- সব ধরণের সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। (তথ্যসূত্র: বাদায়ে: ২/৩২৯; ফাতহুল কাদির: ২/৫০২, ২/৩৮৬, ২/৪৯০, গুনিয়াতুল মানাসিক: ২৪৯; ফতোয়া তাতারখানিয়া: ২/৫০৭)
উল্লেখ্য, ইহরামের আগে খালি গায়ে আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করা মোস্তাহাব। সেই ঘ্রাণ যদি ইহরাম বাঁধার পরও অবশিষ্ট থাকে, তাতেও অসুবিধা নেই। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) ইহরাম গ্রহণের সময় তাঁর সর্বাধিক উত্তম সুগন্ধিটি ব্যবহার করতেন। তিনি বলেন, ইহরাম বাঁধার পর তাঁর শ্মশ্রু ও শির মোবারকে তেলে ঔজ্জ্বল্য দেখতে পেতাম।’ (সহিহ মুসলিম: ১/৩৭৮)