জমজম আল্লাহর কুদরতের বিস্ময়কর নিদর্শন। জমজমের পানি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম পানি। হজ ও ওমরা আদায়কারীর জন্য বিশেষভাবে এবং পৃথিবীর সব মুসলমানের জন্য সাধারণভাবে জমজমের পানি পান করা মোস্তাহাব। সহিহ হাদিসে বিধৃত হয়েছে যে নবীজি (স.) নিজে জমজম থেকে পানি পান করেছেন। (সহিহ বুখারি: ১৫৫৬)
জমজমের পানির বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নবীজি (স.) বলেছেন, ‘জমিনের বুকে জমজমের পানি সর্বোত্তম পানি।’ (সহিহুত তারগিব ওয়াত তারহিব: ১১৬১; তাবরানি ফিল কাবির: ১১১৬৭)
বিজ্ঞাপন
জমজমের পানিতে ক্ষুধা নিবারণ হয় বলেও বিভিন্ন উদাহরণ পেশ করেছেন পূর্ববর্তী আলেমরা। ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, আমি এমন মানুষও দেখেছি, যিনি অর্ধ মাস কিংবা তারও বেশি সময় শুধু জমজমের পানি পান করেই কাটিয়েছেন। কখনও ক্ষুধা অনুভব করেননি। অন্যান্যদের সঙ্গে খুব স্বাভাবিকভাবেই তাওয়াফ করতেন। তিনি আমায় বলেছেন, একবার তো শুধু জমজমের পানি পান করেই ৪০ দিন কাটিয়েছেন। আবু জর গিফারি (রা.) ইসলাম গ্রহণ করে যখন মক্কায় এসেছিলেন, তখন তিনি শুধু জমজমের পানি পান করে ৩০ দিন কাটিয়েছিলেন। (জাদুল মাআদ: ৪/৩৯৩)
সব ধরনের খাদ্য-দ্রব্য ও পানীয় বসে খাওয়া সুন্নত। আর জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করলে কোনো গুনাহ হবে না। তবে আলেমদের একাংশের মতে, এতে আদবের খেলাফ হবে। তাই এ পানি কেবলামুখী হয়ে বসে পান করাই উচিত।
জমজমের পানি পান করার সময় একটি দোয়া পাঠ করা সুন্নত। দোয়াটি হলো— اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَّرِزْقًا وَّاسِعًا وَّشِفَاءً مِّنْ كُلِّ دَاءٍ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিআও ওয়া রিজকান ওয়াসিয়াও ওয়া শিফাআম মিন কুল্লি দা-ইন।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণকর জ্ঞান, প্রশস্ত রিজিক এবং যাবতীয় রোগ থেকে আরোগ্য কামনা করছি।’ (দারা কুতনি: ৪৬৬)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জমজমের পানি পানের সকল আদব রক্ষা করার এবং উল্লেখিত দোয়াটি পাঠ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।