হজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ ও ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রত্যেক সামর্থ্যবান মানুষের ওপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)। হজ না করার পরিণতি সম্পর্কে হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘যে বান্দাকে আমি দৈহিক সুস্থতা দিয়েছি এবং আর্থিক প্রাচুর্য দান করেছি, অতঃপর (গড়িমসি করে) তার পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়ে যায় অথচ আমার দিকে (হজব্রত পালন করতে) আগমন করে না, সে অবশ্যই বঞ্চিত।’ (ইবনে হিব্বান: ৩৭০৩)
হজের ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতসগুলো কী, নিচে সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরা হলো—
বিজ্ঞাপন
হজের ফরজ কাজ তিনটি
১) ইহরাম বাঁধা। ২) উকুফে আরাফা (বা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা)। ৩) তাওয়াফে জিয়ারত বা কাবাঘর তাওয়াফ।
হজের ওয়াজিব নয়টি
(১) সাফা-মারওয়া সাত বার সায়ি করা।
(২) ইহরাম বাঁধার কাজটি মিকাত পার হওয়ার পূর্বেই সম্পন্ন করা।
(৩) আরাফায় অবস্থান সূর্যাস্ত পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করা।
বিজ্ঞাপন
(৪) মুজদালিফায় রাতযাপন।
(৫) মুজদালিফার পর কমপক্ষে দুই রাত মিনায় যাপন করা।
(৬) কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
(৭) হাদি (পশু) জবাই করা (তামাত্তু ও কেরান হাজিদের জন্য)
(৮) চুল কাটা।
(৯) বিদায়ী তাওয়াফ।
হজের সুন্নত কাজসমূহ
রুকন ও ওয়াজিব ছাড়া হজের অবশিষ্ট কার্যাবলী হচ্ছে সুন্নত। যেমন, ইহরাম বাঁধার পূর্বে গোসল করা, শরীরে সুগন্ধি ব্যবহার করা ও দুই রাকাত নামজা পড়া, সাদা রঙের কাপড় দিয়ে পুরুষের জন্য ইহরাম বাধা, তাওয়াফে কুদুম, আরাফার রাতে মিনাতে রাতযাপন, মক্কায় থাকাকালীন বেশি বেশি তাওয়াফ, যথাযথ সময়ে ইজতিবা ও রমল করা, তালবিয়া পাঠ (প্রথম তালবিয়া ইহরাম বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য আবশ্যক) হাজরে আসওয়াদকে চুমু খাওয়া, দোয়া ও জিকির পড়া, সাফা-মারওয়া পাহাড়ে আরোহন করা ইত্যাদি।
রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নতের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, রুকন পালন করা ব্যতীত হজ সহিহ হবে না। ওয়াজিব বাদ পড়লে যদিও হজ সহিহ হবে; তবে জমহুর আলিমের মতানুযায়ী দম (পশু জবাই) দিতে হবে। আর সুন্নত বাদ পড়লে কোনো কিছু করতে হয় না। (বিস্তারিত দেখুন- ইবনু উসাইমিন, আশ-শারহুল মুমতি: ৭/৩৮০-৪১০)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ হজ পালনে বিশুদ্ধ সুন্নাহ জানার ও মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।