শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

হজের মিকাতগুলো কী?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২২, ০১:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

হজের মিকাতগুলো কী?

ইহরাম বাঁধার নির্ধারিত স্থানকে মিকাত বলা হয়। হজ ও ওমরার জন্য মিকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বাঁধা ফরজ। মক্কায় প্রবেশের জন্য পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আগত হাজিদের জন্য একেকটি মিকাত রয়েছে।  অঞ্চলভেদে বিশ্বনবী (স.) ইহরামের জন্য পাঁচটি স্থানকে মিকাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। নিচে মিকাত বা ইহরাম বাঁধার নির্ধারিত স্থানগুলো তুলে ধরা হলো।

১) ইয়ালামলাম। এটি আমাদের এই উপমহাদেশসহ আরো কতেক দেশের মিকাত। ‘ইয়ালামলাম’ একটি পর্বতের নাম। যা ইয়ামানবাসী এবং ওই পথ দিয়ে আগত সকলের জন্য নির্ধারিত। এই মিকাত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান থেকে জলযানের হজযাত্রীদের জন্য মিকাত। জলযানে এ স্থান অতিক্রম করার পূর্বেই জাহাজের নাবিকরা হজযাত্রীদের ইহরাম বাঁধার জন্য বলতেন।


বিজ্ঞাপন


২) জুল-হুলায়ফা বা বীর আলী। এই মিকাত হচ্ছে মদিনা মুনাওয়ারা থেকে এবং সেই পথে মক্কা মোকাররমা আগমনকারীদের জন্য। জুল হুলাইফা হচ্ছে জায়গার নাম। বর্তমানে সর্বসাধারণের মাঝে এ স্থান আবইয়ারে আলি বা বীরে আলি নামে পরিচিত। বাংলাদেশ থেকে যারা আগে মদিনায় যাবেন, তাঁরাও হজ ও ওমরা পালনের জন্য মদিনাবাসীদের মিকাত জুলহুলাইফা থেকে ইহরাম বাঁধবেন।

৩) জাতে ইর্‌ক্ব বা জাতে ইরাক হচ্ছে ইরাকবাসী এবং সেই পথে মক্কা মোকাররমা আগমনকারী যেমন ইরাক, খোরাসান, নজদের মধ্য অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল এবং এর ওপারের দেশবাসীদের দিক থেকে আসা জল, স্থল বা আকাশসীমার হাজিদের মিকাত। এটি একটি উপত্যকা। এটি ‘দরীবা’ নামে পরিচিত।

৪) আলঝুহফা বা জাহফা হচ্ছে মিসর ও সিরিয়াবাসী এবং সেই পথে মক্কা মোকাররমা আগমনকারীদের মিকাত। ‘আলঝুহফা’ জায়গাটি ‘রাবাগ’ নামক স্থানের একটি বিরাণ গ্রাম। যদি কেউ রাবাগে পৌঁছে ইহরাম বাঁধে, তাতেও ইহরাম বাঁধা হয়ে যাবে।

৫) করন বা করনুল মানাজিল। নজদবাসী এবং সেই পথে মক্কা আগমনকারীদের ইহরামের স্থান বা মিকাত। এর বর্তমান নাম ‘আস-সায়েল’। 


বিজ্ঞাপন


কেউ যদি মিকাতের বাইরে থেকে ইহরাম না বেঁধে মিকাতের ভেতর থেকে ইহরাম বাঁধে তবে তার দম ওয়াজিব হবে। আর যারা বিমানযোগে হজ ও ওমরা পালনে বাইতুল্লায় আসবেন, আকাশ পথের মধ্যেই যদি মিকাত পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে তারা রওনার পূর্বেই দেশ থেকে ইহরাম বেঁধে রওয়ানা হবেন। কারণ হজ ও ওমরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে ইহরাম ব্যতীত মিকাত অতিক্রম করা হারাম। তবে শুধুমাত্র চাকুরী, ব্যবসা, চিকিৎসা, পড়াশুনা, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ীতে বেড়ানো বা অন্যকোনো কারণে মক্কা শরিফ প্রবেশ করলে ইহরাম বাঁধা জরুরি নয়। 

প্রসঙ্গত, বর্ণিত পাঁচটি মিকাতের সীমানার ভেতরে যারা বসবাস করেন যেমন জেদ্দা, বাহরা, তায়েফ, শরাইয় ও মক্কার মধ্যবর্তী এলাকার বাসিন্দাগণ বা চাকরিরত বিদেশিরা- হজের জন্য তারা তাদের নিজেদের ঘর থেকেই ইহরাম বাধবেন। তাদেরকে মিকাতে যেতে হবে না। মক্কাবাসীগণ হজের ইহরাম হলে নিজ নিজ ঘর থেকে, আর উমরার ইহরাম হলে মসজিদে তানয়ীমে যাবে অথবা হারামের হুদুদের (সীমানার) বাইরে যে কোন স্থানে গিয়ে বাঁধবেন। মক্কায় চাকরিরত বিদেশিরাও তাই করবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক হাজি-ওমরাকারীকে মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধার অথবা মিকাত অতিক্রম করার পূর্বেই ইহরাম বেঁধে সহিহ-শুদ্ধভাবে হজ-ওমরা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর