বিশ্বমঞ্চে নকআউট পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ প্রাপ্তি সেমিফাইনাল। তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে একাধিকবার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার সুযোগ আসলেও তাতে ব্যর্থ হয়েছে প্রোটিয়ারা। তবে এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দিয়ে দাপটের সঙ্গে সেমিফাইনালে উঠা টেম্বা বাভুমার দল কলকাতায় স্বপ্ন বুনছিল ইতিহাস গড়ার। আগে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শুরুর ছন্দপতনের পর অভিজ্ঞ ডেভিড মিলারের শতকে ২১২ রানের ছোট পুঁজি পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৬ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয় অজিরা। ফলে দীর্ঘ আট বছর পর আবারো ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রেভিস হেডের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ষষ্ঠ ওভারে দলীয় অর্ধশতক পূরণ করে অজিরা। তবে ব্যাটিং পাওয়ার প্লের শেষ দিকে দুই উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ অষ্টম ওভারের ভেতর ফিরে গেলেও এক প্রান্তে দাড়িয়ে থেকে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন হেড।
বিজ্ঞাপন
তবে ইনিংসের ১৫তম ওভারে কেশভ মহারাজ অজি ওপেনারকে ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের আবার আশার আলো দেখান। দলীয় ১০৬ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপর ম্যাচের হাল ধরে স্টিভেন স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেন। তবে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া এই জুটি ভাঙতে দ্রশ্যপটে হাজির হন প্রোটিয়া স্পিনার তাব্রেজ শামসি। এই বাঁহাতি স্পিনার পর পর দুই ওভারে লাবুশেন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেন। দলীয় ১৩৭ রানে ৫ উইকেট হারায় অজিরা।

এরপর স্মিথ ও জস ইংলিসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ম্যাচের গতি নিজেদের দিকে টেনে নেয় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। অভিজ্ঞ স্মিথ শেষদিকে ৩০ রান করে ফিরে গেলে অজিদের জয়ের দায়িত্ব এসে পড়ে ইংলিসের কাঁধে। তবে ক্যাঙ্গারুদের জয় যখন মাত্র ২০ রান দূরে তখন ইংলিসকে সাজঘরে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলে পেসার কোয়েটজি। কিন্তু শেষ দিকে মিচেল স্টার্কের ব্যাটে ১৬ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের জয় তুলে বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে ইডেনে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অজি বোলারদের তোপে পড়ে প্রোটিয়া ব্যাটিং অর্ডার। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মিচেল স্টার্কের শিকার হন বাভুমা। ৪ বলে শূন্য রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন টেম্বা। এরপর তার দেখানো পথে হাঁটেন আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি কক। ব্যাটিং পয়ায়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৮ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিজ্ঞাপন
এরপর ইনিংসের ১২তম ওভারের ভেতর এইডেন মার্করাম ও রাসি ফন ডার ডুসেনকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে আফ্রিকা। দলীয় ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দ্রুত অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে প্রোটিয়ারা।

তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন হেনরি ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। তাদের জুটি বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। তবে ট্রেভিস হেডের ঘূর্ণিতে ৩১তম ওভারে ৯৫ রানের জুটি ভাঙে অজিরা। এরপর সেই ওভারে মার্কো ইয়ানসেনকে ফিরিয়ে ১১৯ রানে ৪ উইকেট থেকে আফ্রিকার ৬ উইকেটের পতন ঘটান হেড।
শেষ দিকে মিলাকে সঙ্গ দেন জেরাল্ড কোয়াটজি। এই বোলারকে সঙ্গে নিয়ে লড়াকু সংগ্রহের পথে এগিয়ে যান মিলার। শেষ পর্যন্ত কামিন্সের বলে নিজের শতরান পূরণ করে দলকে লড়াইয়ে পুঁজি এনে দিয়ে আউট হন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৪৯.৪ ওভারে ২১২ রান তুলে অলআউট হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বোচ্চ ১০১ রানের ইনিংস খেলেন মিলার। অজিদের হয়ে তিনটি উইকেট নেন স্টার্ক।
আগামী ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপ শিরোপার জন্য লড়বে অস্ট্রেলিয়া।





































































































































































