পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া এবারের বিশ্বকাপ শুরু করেছিল প্রথম দুই ম্যাচে হার দিয়ে। তবে তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রবল প্রতাপে ঘুরে দাঁড়ায় অজিরা। আজ নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ার্নার এবং মার্শের বিধ্বংসী জোড়া শতকে ৩৬৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে আশা জাগালেও মিডেল ওভারে খেই হারায় বাবর আজমের দল। শেষ পর্যন্ত অজিদের বোলিং দাপটে ৩০৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ফলে ৬২ রানের জয়ে এবারের আসরের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে প্যাট কামিন্সের দল।
৩৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আব্দুল্লাহ শফিক ও ইমাম উল হকের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় পাকিস্তান। ১৩৪ রানের বিশাল জুটি ম্যান ইন গ্রিনদের জয়ের পথে রাখলেও মার্কাস স্টয়নিসের বোলিং তোপে দ্রুত সাজঘরে ফেরেন দুই উপেনার। অধিনায়ক বাবর আজমও ক্রিজে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। অ্যাডাম জাম্পার বলে ১৮ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। দলীয় ১৭৫ রানে ৩ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে আবারো ম্যাচে ফেরান সউদ সাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
বিজ্ঞাপন
চতুর্থ উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটার দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন। যা পাকিস্তানকে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। তবে তাদের ৫৭ রানের জুটি ভাঙেন অজি অধিনায়ক কামিন্স।
শেষ দিকে রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদের ব্যাট কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। ৪৬তম ওভারে ৩০৫ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় বাবরের দল। ফলে ৬২ রানের বড় ব্যবধানে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল অস্ট্রেলিয়া।

এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন ওয়ার্নার এবং মার্শ। তাদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়েই আজ ভেঙেছে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ২০১১ বিশ্বকাপে এই ব্যাঙ্গালুরুর মাঠেই ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে ১৮৩ রানের জুটি গড়েছিলেন শেন ওয়াটসন এবং ব্র্যাড হ্যাডিন। আর আজ দুই অজি ওপেনার মিলে স্কোরবোর্ডে তুলেন ২৫৯ রান।
বিজ্ঞাপন
পাকিস্তানি বোলারদের তুলোধুনা করে আজ পাওয়ার প্লেতেই ৮২ রান তুলেছেন দুই অজি ওপেনার। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৩৯ বলেই নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন ওয়ার্নার। এর পরপরই ৪০ বলে ফিফটি তুলে নেন মার্শও। এ দুজন মিলে আজ ৭৫ বল খেলেই স্কোরবোর্ডে তুলেন ১০০ রান।
ওয়ার্নার এবং মার্শের সামনে আজ পাকিস্তানি বোলারররা ছিলেন একেবারে ছন্নছাড়া। পাওয়ার প্লে তে শাহিন আফ্রিদি মিতব্যয়ী থাকলেও বাকি সবাই ছিলেন খরুচে। এদিকে একের পর এক বাউন্ডারিতে আজ ওয়ার্নার নিজের সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ৮৫ বলেই। এরপর মার্শও নিজের ব্যক্তিগত শতক তুলে নিয়েছেন ১০০ বল খেলে।
ওয়ার্নার- মার্শের উদ্বোধনী জুটি আজ ভেঙেছেন শাহিন আফ্রিদি। দলীয় ২৫৯ রানে শাহিনের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে উসামা মীরের ক্যাচে পরিণত হন মার্শ। সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ১০৮ বলে ১০ চার এবং ৯ ছয়ে ১২১ রান। আর বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটিই এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি।

এদিকে ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে আজ গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে তিনে নামিয়েছিল অজি টিম ম্যানেজম্যান্ট। তবে মারকুটে এ ব্যাটার হতাশ করেছেন আজও। মার্শ আউট হওয়ার পরের বলেই ক্যাচ তুলে দিয়ে তিনিও শূন্য রানেই ফিরেছেন সাজঘরে। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে তাই কিছুটা কমে আসে অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি।
ম্যাক্সওয়েলের পর মাঠে ওয়ার্নারের সঙ্গী হন স্মিথ। ৭ রান করে তিনিও ফিরেছেন দলীয় ২৮৪ রানেই। এদিকে দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও আজ ওয়ার্নারকে ফেরাতে পারেনি পাকিস্তানি বোলাররা। অজি ওপেনার ১১৬ বলে করেন ১৫০ রান। তাঁর সামনে সুযোগ ছিল বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলার নিজের রেকর্ডই ভাঙার। তবে পারেননি তিনি।
দলীয় ৩২৫ রানে হারিস রউফের বলে বদলি নামা শাদাব খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। আউট হবার আগে করেছেন ১২৪ বলে ১৪ চার আর ৯ ছয়ে ১৬৩ রান। অতহচ এই ওয়ার্নার আজ ফিরতে পারতেন মাত্র ১০ রানেই। ৪.৩ ওভারে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন শাহিনের বলে। তবে সেই ক্যাচটি তালুবন্দী করতে পারেননি উসামা। ক্যাচ মিসের সেই খেসারতই আজ দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে।
তবে ওয়ার্নার ফেরার পর আর আজ অজিদের ইনিংসের হাল ধরতে পারেননি কেউ। তবুও দুই ওপেনারের বিধ্বংসী ২৫৯ রানের জুটিতে শেষ পর্যন্ত ৩৬৭ রানের সংগ্রহ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের হয়ে আজ সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নিয়েছেন শাহিন।





































































































































































