মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বিশ্বকাপে অভিজ্ঞতাই হবে ইংল্যান্ডের মূলশক্তি

প্রকাশিত: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

বিশ্বকাপে অভিজ্ঞতাই হবে ইংল্যান্ডের মূলশক্তি

বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর মাঠে গড়াবে আগামীকাল। ইতোমধ্যে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো অবস্থান করছে ভারতে। মূল আসর শুরুর আগে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে প্রতিটি দলই খেলছে অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ। ৫ই অক্টোবর থেকে ভারতের মাটিতে শুরু হওয়া দশ দলের ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে টানা ৪৫ দিন বুঁদ হয়ে থাকবে ক্রিকেটে প্রেমীরা।

এরইমধ্যে সবাই সবার প্রিয় দলকে সাপোর্ট দিতে আয়োজনের কমতি নেই, কোন দলের শক্তিমত্তা কেমন, কোথায় দুর্বলতা সে সব নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এমনই এক দল গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ড। 


বিজ্ঞাপন


বিশ্বকাপে ইংলিশরা: ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে ৫ নম্বরে থাকা ইংল্যান্ড সরাসরি যোগ্যতা নিয়ে আসে ভারত বিশ্বকাপে। এছাড়া এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম ফেবারিটও তারা। ভারতে আসার আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দাপুটে জয় পেয়েছে ইংলিশরা। এশিয়ান কন্ডিশনে খেলা হলেও শিরোপা ধরে রাখার ব্যাপারে আশাবাদী বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

অতীত ইতিহাস: ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের প্রথম অংশ গ্রহন ১৯৭৫ সালে। এরপর থেকে ১২টি আসরে বিশ্বকাপে উপস্থিতি ছিল দেশটির। আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া ২০২৩ বিশ্বকাপ দিয়ে ১৩তম আসর খেলবে ইংলিশরা। গত বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল। ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটেছিল ২০১৯ সালে। সাদা বলের ফর্ম্যাটে  বিশ্বের সেরা দল হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল ইংল্যান্ড শিবির। এবারের বিশ্বকাপে তাই ইংল্যান্ড ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মাঠে নামতে চলেছে। এর আগে ১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ১৯৯২ বিশ্বকাপে রানার্স আপ হলেও খেতাব ঘরে তুলতে পারেনি ব্রিটিশ বাহিনী। ইংল্যান্ড শিবির বরাবরই লাল বলের ক্রিকেটকেই প্রাধান্য দিয়েছিল। 

তবে ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে হার ও চূড়ান্ত ভরাডুবির পর টিম ম্যানেজমেন্ট দলের পুরো খোলস বদলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অ্যান্ডারসন, ব্রডের মত তারকারা টেস্টে ফর্ম্যাটে ফিরে আসেন। প্রচুর নতুন ক্রিকেটার তুলে আনা হয় একদিনের ক্রিকেটে। মর্গ্যানের হাতে নেতৃত্বের ব্যাটন তুলে দেওয়া হয়। এরপর চার বছরের পরিশ্রমের পর ২০১৯ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তাকমা লাগায় ইংলিশরা। 

এবার জস বাটলারের নেতৃত্বে বিশ্বকাপে খেলতে নামবে তারা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে মোট ৮৪টি ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। জয় পেয়েছে ৪৯ ম্যাচে। ৩৩ ম্যাচ হারতে হয়েছে। ১টি টাই ও ১টি ম্যাচ কোনও ফল নির্ধারণ হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে আয়োজিত এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম হট ফেভারিট বাটলার বাহিনীই।


বিজ্ঞাপন


সাম্প্রতিক ফর্ম: বিশ্বকাপের আগে নিজেদের দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচ ছিল ইংল্যান্ডের। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে এক বলও খেলা হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন বাটলাররা। ৩৭ ওভারের ম্যাচে ৭৭ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট ম্যাচ জিতে যায় ইংল্যান্ড। এর আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জেতে ব্রিটিশরা। তার আগে কিউয়িদের বিপক্ষে ৪ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পিছিয়ে থেকেও ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছিলেন রুট, স্টোকসরা। ফলে বিশ্বকাপের মূলপর্বেও এই ছন্দ ধরে রাখতে চাইবে ইংল্যান্ড শিবির।  

২০২৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের শক্তি: ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ হলেও ইংলিশরা বেশ এগিয়ে থাকবে। কন্ডিশন বিবেচনার পাশাপাশি অতীতে এশিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ডের ভালো করার রেকর্ড আছে। ইংল্যান্ডের অন্যতম শক্তির জায়গা তাদের ব্যাটিং ইউনিট। জস বাটলার, মঈন আলী, বেন স্টোকস, দাভিড মালানদের মতো ব্যাটাররা বড় ইনিংস খেলতে পটু। পাশাপাশি আদিল রশিদ-ডেভিড উইলিদের মতো বোলাররা প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের জন্য ভয়ের কারণ।

দুর্বলতা: সবসময় পেস কন্ডিশনে খেলা ইংলিশরা কোয়ালিটি স্পিনারদের বিপক্ষে বেশ ভুগতে দেখা যায়। এর আগেও ভারতের মাটিতে স্পিনারদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে ইংলিশ ব্যাটারদের। তাই বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষের স্পিন আক্রমণ সামলাতে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হবে ইংল্যান্ডকে।

যে কারনে ভারতের মাটিতে চমক দিতে পারে ইংলিশরা: ম্যাচ ঘুড়িয়ে দিতে পারে যেই ইংলিশ ক্রিকেটাররা: ২০১৯ বিশ্বকাপজয়ী ইংলিশদের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারদের পাল্লা খানিকটা ভারিই। আসন্ন বিশ্বকাপে মঈন আলীর সঙ্গে আছেন লিয়াম লিভিংস্টোন, বেন স্টোকস ও ক্রিস ওকস। এদের প্রতেক্যেই নিজেদের দিনে কতখানি ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন সেকথা ক্রিকেট বিশ্ব ভালোভাবেই জানে।

ইংল্যান্ডের বোলিং ইউনিটও বেশ কার্যকরী। স্যাম কুরান, ডেভিড উইলি, রিস টপলি, আদিল রশিদ প্রতেক্যেই অভিজ্ঞ। এমনকি বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরেছেন এ বোলাররা। তবে ইংলিশ শিবিরে সুযোগ পাওয়া গাস অ্যাটকিনসন সে তুলনায় খানিকটা পিছিয়েই থাকবেন। অভিজ্ঞতা ও অলরাউন্ডদের মেলবন্ধনে দারুণ স্কোয়াড সাজিয়েছে ইংল্যান্ড। যেখানে তিন ইউনিটেই ভারসাম্য বজায় রেখেছে ইংলিশরা।

বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের দল: জস বাটলার (অধিনায়ক), মঈন আলী, গাস অ্যাটকিনসন, জনি বেয়ারস্টো, স্যাম কারান, লিয়াম লিভিংস্টোন, দাভিড মালান, আদিল রশিদ, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস, রিস টপলি, ডেভিড উইলি, মার্ক উড, ক্রিস ওকস।

এক নজরে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল 
বিশ্বকাপে অংশগ্রহন: আসন্ন বিশ্বকাপসহ ১৩ বার  
শিরোপা: ১বার
আইসিসি র‍্যাঙ্কিং: ৫ নম্বরে
বিশ্বকাপের অধিনায়ক: জস বাটলার
বিশ্বকাপের কোচ: ক্রিস সিলভারউড
বিশ্বকাপে তাদের প্রতিপক্ষ: পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান, নেদারল্যান্ডস।

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর