অমর একুশে বইমেলার নবম দিনে মোট ১২৩টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ৪৮টি কবিতা ছাড়াও ২৫টি উপন্যাস ও ২২টি গল্পসহ বিভিন্ন বিষয়ের বই রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এ দিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চালু ছিল।
বিজ্ঞাপন
কবিতা, উপন্যাস, গল্প ছাড়াও এই সময়ে প্রকাশিত অন্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬টি প্রবন্ধ, ২টি গবেষণা, ৩টি জীবনী ও একটি রচনা। এছাড়া বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুইটি, বিজ্ঞান বিষয়ক একটি, ভ্রমণ বিষয়ক দুইটি, ইতিহাস বিষয়ক চারটি ও সায়েন্স ফিকশন বিষয়ক একটি ছাড়াও অন্যান্য আরও তিনটি বিষয়ক বই প্রকাশ হয়েছে।
এদিকে, অমর একুশে বইমেলার নবম দিনে নিজেদের বই নিয়ে ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন মালেক মাহমুদ, সুপা সাদিয়া, খান মুহাম্মদ রুমেল, গিরীশ গৈরিক প্রমুখ। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন বিমল গুহ, স্নিগ্ধা বাউল এবং রমজান মাহমুদ। পাশাপাশি আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রাজিয়া রহমান, জাহান বশির এবং এএসএম সামিউল ইসলাম।
অন্যদিকে, সংগীত পরিবেশনায় ছিলেন শিল্পী কাঙ্গালিনি সুফিয়া, আব্দুর রহমান, বশির উদ্দিন সরকার, সুভাষ বিশ্বাস, কোহিনুর আক্তার গোলাপী, মো. নূরুল ইসলাম, বিমল বাউল, সুধীর মন্ডল ও অমিয় বাউল। সেই সঙ্গে যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন পুলিন চক্রবর্তী (তবলা), মো. রিফাত হোসেন (কী-বোর্ড), রনজিৎ কুমার বৈরাগী (দোতারা), গাজী আব্দুল হাকিম (বাঁশি) এবং মো. হাসান মিয়া (বাংলা ঢোল)।
এছাড়া নবম দিনে বিকলে ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কবীর চৌধুরী এবং সাংবাদিক-সাহিত্যিক জহুর হোসেন চৌধুরীর জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবদুস সেলিম ও জাহীদ রেজা নূর। এছাড়া উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, খায়রুল আলম সবুজ, মনজুরুল আহসান বুলবুল এবং মুস্তাফিজ শফি। সভাপতিত্বে ছিলেন শফি আহমেদ।
বিজ্ঞাপন
এ দিন আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রাবন্ধিকরা বলেন, এক জীবনে কত যে বিপুল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা যায়, তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ কবীর চৌধুরী। তিনি বাংলা-ইংরেজিতে যেমন মৌলিক লেখা লিখেছেন, তেমনি অনুবাদও করেছেন। জীবদ্দশায় কমপক্ষে ১০টি সগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
কবীর চৌধুরী প্রকৃত অর্থেই জাতীয় অধ্যাপক ছিলেন উল্লেখ করে তারা বলেন, কারণ তিনি ছিলেন সবারই শিক্ষক হবার গুণসম্পন্ন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। অপরদিকে সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতা জীবনের লড়াইয়ের কালটিও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যৌবনে বাম ধারার প্রতি আকৃষ্ট জহুর হোসেন চৌধুরীর সাংবাদিকতার বৈশিষ্ট্য হলো- বস্তুনিষ্ঠতাকে হেয় না করে সত্যকে তুলে ধরা।
সভায় অন্য আলোচকরা বলেন, কবীর চৌধুরী এবং জহুর হোসেন চৌধুরী উভয়েই প্রগতির পথিক। তারা একটি শতাব্দীজুড়ে স্বাধীনতা, সাম্য এবং অসাম্প্রদায়িকতার জন্য লড়াই করে গেছেন। শিক্ষা বিস্তার, সাংবাদিকতা এবং সমাজ-রাষ্ট্রের সাময়িক ইতিবাচক বিকাশের জন্য তাঁদের সংগ্রামী অভিযাত্রা কখনো বিস্মৃত হওয়ার নয়।
এছাড়া সভাপতির বক্তব্যে শফি আহমেদ বলেন, কবীর চৌধুরী এবং জহুর হোসেন চৌধুরীকে স্মরণ আমাদের জাতিগত কর্তব্য। তারা যে প্রতিকূল পরিবেশে আমাদের সবার জন্য ইতিবাচক সমাজ গড়ার সংগ্রাম করেছেন, তা আজকের প্রজন্মকে স্মরণে রাখতে হবে।
এমএইচ/আইএইচ