সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষ: ক্ষতির শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২২, ০১:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষ: ক্ষতির শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

করোনার কারণে দুই বছর মন্দা সময় কেটেছে নিউ মার্কেট, চন্দ্রিমা, গাউসুল আজমসহ আশপাশের এলাকার দোকানিদের। করোনার প্রভাব কমে আসায় এবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়েছে। গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঈদুল ফিতরে ব্যবসায়ীরা যখন আশায় বুক বেঁধেছেন তখনই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষের কারণে ফের ব্যবসা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ঈদের কয়েকদিন আগে মার্কেটে এমন আতঙ্কে ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল সোমবার (১৮ এপ্রিল) মধ্যরাতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর রাতভর উত্তেজনা ছিল রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায়। রাতভরই ছিল থমথমে পরিস্থিতি।


বিজ্ঞাপন


কিছু সময়ের জন্য পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ভোরে শিক্ষার্থীরা মিরপুর সড়ক অবরোধ করলে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টার দিকে ফের সংঘর্ষে জড়ায় ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীরা। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় এখনো চলছে নিউমার্কেট এলাকার সড়কে।

ঈদের আগে মার্কেটে এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। একাধিক ব্যবসায়ী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা এখনো করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এর মধ্যে এমন ঘটনা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আসিফ বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে দোকানে নতুন করে ১২ লাখ টাকার মাল উঠাইছি৷ রোজার শেষ সময়ে একটা ভালো বেচাকেনা হইব মনে করছিলাম৷ কিন্তু যে পরিস্থিতি দেখতাছি মনে হয় না এবার আর দোকান খুলতে পারমু৷ ঝামেলা শুরু হইছে কয়েকজন মিলে মিটমাট করে দিলেই পারত৷ এই ঝামেলা এত বড় করার কি দরকার ছিল।’

নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ইমরান বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে আমাদের ব্যবসার অনেক খারাপ অবস্থা৷ তারপর প্রতিবছর ঢাকা কলেজের পোলাপানের সঙ্গে মার্কেটে ব্যবসায়ী ৬/৭ দফা মারামারি হয়৷ যার কারণে আমাদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।’


বিজ্ঞাপন


নিউ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, ‘তারা দোকানে এসে বলে প্যাকেট কর, আমি ঢাকা কলেজের স্টুডেন্ট৷ মনে হয় তাদের বাপের সম্পত্তি এইভাবে বলে৷ আর এখন রমজান একটা সিজন চলছে, এই সময়ে ব্যবসা না করতে পারলে সারাবছর খামু কি।’

নিউ মার্কেটের দোকান কর্মচারী আলম বলেন, ‘এই ঝামেলায় ভুক্তভোগী হমু আমরা৷ মালিক এখন কইব ব্যবসা করতে পারি নাই ঈদে কোনো বোনাস নাই৷ এমনও হইতে পারে আরও কয়েকদিন চললে আমাদের বেতনও পুরাটা দিব না মালিকেরা।’

নিউ মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী তোফায়েল বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত তো হইছি কিন্তু এখন মনে হইতাছে এখান থেকে যদি সইরা যাই, তাইলে আমগো মার্কেটেই আগুন লাগাইয়া দিব৷ তখন করমু কি? দেহেন একটু পরপর ককটেল পাডাইতাছে৷ কালকে রাইতে এত পুলিশ এত রাবার বুলেট এত কিছু৷ কিন্তু আইজকা কোনো খবরই নাই৷ আমগো মার্কেটে হামলা চালাইলে, লুটপাট করলে আমরা বাঁচমু কি খাইয়া?’

ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের ক্ষতির বিষয়টি সবার আগে দেখতে হবে। সারা বছর ব্যবসায়ীরা ঈদের জন্য অপেক্ষায় থাকেন।

তিনি আরও বলেন, ঘটনা সমাধানে আমরা চেষ্টা করছি। এখানে কিছু শিক্ষার্থীর নিজেদের ঢাকা কলেজে এবং রাজনৈতিক দলের পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেওয়ার প্রবণতা যেমন রয়েছে, তেমনি কিছু ব্যবসায়ী চাইলেই এসব ঝামেলা এড়িয়ে চলতে পারেন। দুই পক্ষেরই দোষ রয়েছে।

ডিএইচডি/ এমআই/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর