ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। দেশি-বিদেশি নাগরিকদের পদচারণায় মুখর শহীদ মিনার ইতোমধ্যে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। তবে শহীদ মিনারের বেদীতে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্কাউট ও বিএনসিসির কর্মীরা বারবার অনুরোধ করলেও তাদের কথা শুনছেন না কেউ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কেউ কেউ বেদীতে বসে পড়ছেন ছবি তুলতে। এতে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
অতীতে সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রদ্ধা জানাতেন। এবার যেন এর কোনোই বালাই নেই। বারবার মাইকে বলা হলেও লোকজনের যেন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
বিজ্ঞাপন
সব বয়সী মানুষের ভিড়ে শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হলেও অন্য বছরের তুলনায় বাইরে ভিড় কম।
শহীদ মিনারের ঘোষণামঞ্চ থেকে বলা হয়, যারা শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তারা শৃঙ্খলার সঙ্গে জানাবেন। এলোমেলো হয়ে এলে বিএনসিসি ও রোবারের সদস্যরা তাদের বেদী থেকে নামিয়ে দেবেন।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর হামিদ ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিজ্ঞাপন
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সংস্থার শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে জনসাধারণের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। পরে একে একে শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ।
মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোঁটার আগে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। দেখলে মনে হয় রাজধানীর সব স্রোত যের শহীদ মিনারের দিকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দীর্ঘ লাইন ছড়িয়ে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়ে পলাশী মোড় ও নীলক্ষেতের পর্যন্ত চলে যায় সেই লাইন। লাইনে দাঁড়িয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তারা।
দুই সন্তানকে নিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা শ্যামলীর রাবেয়া আক্তার ঢাকা মেইলকে বলেন, বাচ্চাদের শহীদ মিনার কী, কেন এটা তৈরি হয়েছে এসব বিষয় শেখানো দরকার। যে কারণেই ওদের নিয়ে এসেছি। খুব আনন্দ পাচ্ছে।
ষাটোর্ধ্ব আকবর আলী নামের একজন এসেছেন লালবাগ থেকে। ঢাকা মেইলকে বলেন, ভাষা তো আমাদের গর্বের। পৃথিবীতে কোনো জাতি ভাষার জস্য জীবন দেয়নি। তাই একদিন হলেও শহীদ প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসতে পেরে ভালো লাগছে।
বিইউ/জেবি