বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ঢাকা

শিশুদের ভাবনায় ২১ ফেব্রুয়ারি

শামসুল আলম
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৫৮ এএম

শেয়ার করুন:

শিশুদের ভাবনায় ২১ ফেব্রুয়ারি
ছবি : ঢাকা মেইল

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির অহঙ্কার—বাঙালির অস্তিত্ব। বাংলার সূর্যসন্তানরা সেদিন বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত করেছিল ঢাকার রাজপথ। এনে দিয়েছিলেন আমাদের অহঙ্কারের ২১ ফেব্রুয়ারি।  তাদের দেখানো পথে উজ্জীবিত হয়েই আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। তাই বাঙালির এই আত্মত্যাগে আমরা বিশ্বে অনুকরণীয়। এজন্য আমরা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণের সঙ্গে পালন করে থাকি ২১ ফেব্রুয়ারি তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস।

মহান ভাষা শহীদদের ত্যাগের ও মহিমার স্মৃতি স্মরণ করে আমরা প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। বৃদ্ধা-মধ্যবয়স্ক, যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীদের প্রাণাবেগকে বেদনা আপ্লুত করতে পারলেও শিশুদের কৌতুহল ও ভাবনায় মাতৃভাষা কতটুকু রয়েছে তা চিন্তার বিষয়। মাতৃভাষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য এখনও তাদের অধরা।


বিজ্ঞাপন


পাবনা শহরের শহীদ অশোক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সানজিতা খাতুন জানায়, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এইদিনে পুলিশ অনেক লোককে গুলি করে মেরে ফেলছিল। পরে সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস করেছে।

শহরের পৈলানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলে, ২১ ফেব্রুয়ারি আমরা ফুল দিই। আমার আব্বু সঙ্গে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে আসি। কারণ, আজ একুশে ফেব্রুয়ারি।

শিশুদের ভাবনায় ভাষার চেতনাবোধ ও মমতাবোধকে জাগ্রত করতে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষকরা। স্কুলে যেটুকু সেখানে হয় এর বাহিরে শিশু শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্র অত্যন্ত কম বলেই শিশুদের ভাবনায় এখনও ভাষা গুরুত্ব স্থান পায়নি।

pabna


বিজ্ঞাপন


শহরের সেন্ট্রাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার খন্দকার বলেন, স্কুলের পাঠ্যবইয়ের বাহিরে শিশুদের তেমনভাবে ভাষা ও একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্ক শেখানো হয় না। স্কুলে যতটুকু শেখানো হয় শিশুরা ততটুকুই জানতে পারে। এই ক্ষেত্রে শিশুদের অভিবকরাও যদি বাড়িতে বা চলার ক্ষেত্রে শিশুদের ভাষা সম্পর্ক জ্ঞান দেন তাহলেই শিশুরা মাতৃভাষা ও ২১ ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব বুঝবে।

এক্ষেত্রে শিক্ষক, সমাজ ও অভিভাবক সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, স্কুলে পরীক্ষা ও সিলেবাসের জন্য যতটুকু প্রয়োজন আমরা ততটুকুই শেখাই। যেন কোনো মতে মুখস্ত করে পরীক্ষায় পাস করলেই চলবে। এইজন্য শিক্ষার সকল স্তরে বাংলা ভাষা শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে হবে। একুশে ফেব্রুয়ারি তাদের মনস্তান্তিক জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্র সৃষ্ট করতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবদেরও সচেতন হতে হবে। বাবা-মা সচেতন না হলে এই ক্ষেত্রে খুববেশি অগ্রগতি হবে বলে মনে হয় না।

সমাজ ও অধিকারকর্মী সঞ্জিত সরকার বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগ আমরা ভুলতে বসেছি। তরুণ-তরুণীরা বাংলার পরিবর্তে ইংরেজি রপ্ত করতেই বেশি আগ্রহী। সেটা এখন শিশুদের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ছে। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার সীমিত। আমরা যদি আগামী প্রজন্মকে বাংলা ভাষার গুরুত্ব ও মর্যাদা না বোঝাতে পারে, তাহলে বাঙাভাষার চেতনাবোধ ও মমতাবোধ বিলুপ্তি ঘটবে। তাই মাতৃভাষাকে বুকে ধারণ করে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর