রোববার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

নোয়াখালীতে অর্ধেকের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

এ.এস.এম.নাসিম
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

নোয়াখালীতে অর্ধেকের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

নোয়াখালী জেলার ৯ উপজেলার অর্ধেকের বেশি  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী জেলার ৯ টি উপজেলায় ৩১২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৮২ টি মাদরাসাসহ মোট ৪৯৪ টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯২ টিতেই কোন শহীদ মিনার নেই। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। 


বিজ্ঞাপন


কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে কোনো কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না বানিয়ে শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে তা-ও করা হয় না।

শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, জেলার সেনবাগ উপজেলার ৫টি স্কুল ও ২১টি মাদরাসাসহ ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চাটখিল উপজেলার ৩ টি কলেজ, ১৬টি স্কুল ও ১৭টি মাদরাসাসহ ৩৬ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবিরহাট উপজেলার ৮টি স্কুল ও ৪ টি মাদরাসাসহ ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৩টি স্কুল ও ৩৪টি মাদরাসাসহ ৪৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সদর উপজেলার ২১টি স্কুল ও ২৮টি মাদরাসাসহ ৪৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১টি কলেজ, ১০টি স্কুল ও ১৩টি মাদরাসাসহ ২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সুবর্নচর উপজেলার ১৭টি স্কুল ও ১৭টি মাদরাসাসহ ৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সোনাইমুড়ী উপজেলার ১৯টি মাদরাসা ও ২৪টি স্কুলসহ ৪৩ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাতিয়া উপজেলার ৪টি স্কুল ও ১৭টি মাদরাসাসহ ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। 

বর্তমান সময়ে এতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা এটা অনেকটা দুঃখজনক বিষয় বলে মনে করেন নোয়াখালী নাগরিক অধিকার মোর্চার যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল আলম মাসুদ। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিকে বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ এবং জাতীয়তা বোধের প্রথম স্তর যেটা থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তৈরী হয়েছে। বাঙ্গালির সাথে একুশে ফেব্রুয়ারীর একটা আত্মিক সম্পর্ক আছে। সব কিছু যে রাষ্ট্রীয়ভাবে হতে হবে বিষয়টি তা নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা কমিউনিটি ভিত্তিতে হওয়া উচিত। সমাজের উদ্যোমি তরুণরা এক হয়ে নিজ নিজ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার তৈরীর উদ্যোগ নেয়া উচিত। সমাজের বিত্তবানদের ও এবিষয়ে এগিয়ে আসা উচিত।এছাড়া, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদের-ও এ বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করা উচিত। যেহেতু বাঙালি জাতির জীবনে শহীদ মিনার গুরুত্বপূর্ণ একটি স্মারক তাই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটি অবশ্যই থাকা উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা শিক্ষা অফিসার নুর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি সব সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটিকে এ বিষয়ে তাগিদ দিয়ে থাকি। প্রয়োজনে, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার প্রধান শিক্ষকদের চিঠি দেওয়া হবে।


বিজ্ঞাপন


নোয়াখালীতে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরা আবেদন করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান নোয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত আছি। সেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। আমি যেহেতু জেলা পরিষদের দায়িত্ব পেয়েছি আমি সব সময় যেকোন ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমি চাই নোয়াখালীর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হোক।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর