জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা বাংলা হলে প্রতিবছর আমাদের ৮শ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘মহান শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে একথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যয় বিবেচনায় এখনই বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবে প্রস্তাব যুক্তিসঙ্গত মনে করেন না অনেকে। তবে আর্থিক সঙ্গতি হলে বাংলাকে নিশ্চয়ই জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও দাবি জানাব, বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার মর্যাদা দিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা ভাষার মর্যাদা দিতে হবে।’
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা করতে হলে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে। জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা করতে হলে প্রতি বছর ৮০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। আমাদের বিবেচনা করতে হবে এত টাকা খরচ করা যুক্তিসঙ্গত হবে কি না। তবে এই সক্ষমতা এক দিন বাংলাদেশেরও তৈরি হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে এটার পক্ষে বেশি মতামত আসবে না। যদিও আমাদের শ্রদ্ধা আছে, ভালোবাসা আছে, সবই আছে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের ভাষা আন্দোলন আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে শক্তি যুগিয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলায় বক্তব্য দিয়েছেন। এখন বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের দাবী ওঠে। পরে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোতে প্রস্তাব তোলার পর এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আমরা সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা সকলের ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল, এমনকি ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ভাষার প্রতিও আমরা সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নেন বাংলাদেশ, কেনিয়া, রাশিয়া, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া ও মালদ্বীপের প্রতিনিধিরা।
ডব্লিউএইচ/এইউ