মাদারীপুরে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জুতা পরে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনজুর ইসলাম। তবে তার দাবি- ধাক্কাধাক্কির কারণে জুতা খোলার সুযোগ হয়নি। ছাত্রলীগ সভাপতির এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজ।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মাদারীপুর সরকারি কলেজ মাঠে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে ফুল দিতে গেলে এই ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন প্রথমে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পর্যায়ক্রমে মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ নীরব, পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, যুবলীগ, যুবদল, ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন।
জুতা পায়ে শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনজুর ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘খুব ভিড় আর ধাক্কাধাক্কির কারণে জুতা খোলার সুযোগ হয়নি। আমি জুতা খুলতে গিয়েছিলাম, কিন্তু পেছনে আমাদের নেতাকর্মীর অনেক চাপ ছিল। তখন জুতা পায়েই উঠে গিয়েছি।’
এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে। আমি তার সাথে কথা বলে দেখবো- তিনি ইচ্ছাকৃত নাকি অনিচ্ছায়কৃত কাজটি করেছেন।’
মাদারীপুরের সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ইয়াকুব খান শিশির ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক কথা। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি, তাদের শ্রদ্ধা জানানো হলো জুতা পায়ে দিয়ে। তাদের ছাত্রত্ব ও শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়। ঘটনাটি দুঃখজনক।’
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর কবির ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তিনি জুতা পায়ে দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেন না। আমি এর নিন্দা জানাই।’
প্রতিনিধি/জেবি