শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

চিকিৎসক হতে চেয়েছিল ছোট্ট সায়মা, আগুনে থেমে গেল স্বপ্ন

আবুল হাসান, গাজীপুর
প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৫, ১২:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

চিকিৎসক হতে চেয়েছিল ছোট্ট সায়মা, আগুনে থেমে গেল স্বপ্ন
সায়মা

বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখত ছোট্ট সায়মা। এজন্য চাকরিজীবী বাবা তার মেধাবী মেয়েকে ভর্তি করান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে। কিন্তু প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ট্রাজেডিতে আগুনে পুড়ে থেমে গেছে স্বপ্ন।

একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন নিহতের বাবা, মা ও স্বজনরা। স্থানীয়রা বলছেন, পুরাতন বিমান দিয়ে আর প্রশিক্ষণ নয়, এমন নির্মম দুর্ঘটনা চান না তারা।


বিজ্ঞাপন


নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিপ্রবর্থা এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে চাকরির সুবাদে থাকতেন রাজধানীর উত্তরায়। মেধাবী সাইমার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে মেয়েকে ভর্তি করেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। গত তিনটি বছর সব কিছুই চলছিল স্বাভাবিক। কিন্তু সোমবার প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে অন্ধকার নেমে আসে শাহ আলমের পরিবারে। বিমানের লেলিহান আগুনে মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সায়মার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন।

নিহতের বাবা শাহ আলম বলেন, রোববার রাতে মেয়ে তার বুকে এসে তাকে চুমু খায়। সোমবার সকালে ঘুমের মধ্যে মেয়েকে রেখে অফিসের কাজে বরিশাল যান তিনি। এরপর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পান। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দিনভর মেয়েকে খুঁজেছেন। পরে রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের মর্গে পাওয়া যায় সায়মা ছোট্ট মরদেহ। এসময় ছেলে সাব্বির তার বোনের মরদেহ শনাক্ত করে।

তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল সে ডাক্তার হবে। এখনতো সব শেষ। এজন্য আমি কাউকে দায়ী করি না, আমার কপালে নেই।

 

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে লাশবাহী গাড়িতে সায়মার নিথর মরদেহ পৌঁছে গাজীপুরের বিপ্রবর্থা এলাকায়। এসময় পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশ। পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে ভিড় করছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন নিহতের স্বজনরা। পরে সকাল ১১টায় নিহতের নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এলাকাবাসি বলেন, দুর্ঘটনায় এতগুলো প্রাণহানিতে তারা শোকাহত। তবে পুরাতন বিমান দিয়ে যেন আর কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া না হয় এমন দাবি তাদের।

শাহ আলমের দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে সায়মা ছিল সবার ছোট। একই স্কুল থেকে সম্প্রতি এসএসসি পাস করেছেন তার বড় ছেলে সাব্বির হোসেন।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর