আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। ক্ষমতাসীন ও তাদের বিরোধী দলগুলো প্রায়শই ঘোষণা করছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। গেল ১৫ বছরের মধ্যে আজ সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ দিন। দেড় কিলোমিটার দূরত্বে লাখ লাখ নেতাকর্মী জমায়েতের লক্ষ্যে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ-বিএনপি। এদিকে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তির বড় এই কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে আজ মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও। রাজধানীর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। যদিও সার্বিক সহযোগিতা ও সমাবেশের অনুমতির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আবেদন করলেও তা মেলেনি। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একযোগে সমাবেশ করবে সরকারবিরোধী ছোট ছোট দলগুলো।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশ চলাকালে সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতে রাজধানীতে হাজার হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য সংস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং এর উপকণ্ঠে স্থাপিত চেকপোস্টগুলোকে ম্যানেজ করছেন অনেকে। ঢাকাগামী বাসে যাত্রীদের চেক করতে দেখা গেছে পুলিশকে। শহরের প্রবেশপথে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছ থেকে তাদের নিজ নিজ স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে।
মূলত বিএনপি, জামায়াত এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের তদারকি এবং অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং একটি নির্দলীয় প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হওয়ার কথা। বিএনপিও তাদের অসুস্থ চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে।
বিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা উল্লেখ করে নির্বাচন আয়োজনে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। তারা বলেছে, বর্তমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই।
রাজনৈতিক অচলাবস্থা অব্যাহত থাকায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। সেখানে শনিবার বিএনপিকে কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি না করার হুঁশিয়ারি দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি তার দলের সদস্যদের বলেছেন, ‘বিএনপি সহিংসতার হুমকি দিচ্ছে, কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’
এ সময় হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নয়াপল্টনে অবস্থান নেয়। তারা পুলিশ ও আওয়ামী লীগের বাধার অভিযোগের ভয়ে তাড়াতাড়ি পৌঁছে যায়। বিকেলে তাদের অনেকেই শনিবারের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তায় বসতে শুরু করেছেন, যাকে তারা মহাসমাবেশ বলছেন। উভয় দলই তাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণ করার অঙ্গীকার করেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে। ‘এটা আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বের সূচনা। আমরা জয়ী হব।
ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের নেতারা এবং নগরবাসীও চান রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে ও সহিংসতা ছাড়াই পালন করুক।
অর্থনীতি সচল রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংঘর্ষ এড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধির জন্য স্থিতিশীল ও অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ প্রয়োজন। যেহেতু সব রাজনৈতিক দলের জনগণের কল্যাণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে তাদের সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা উচিত।
এইউ








































































