আসলাম আলী প্রামাণিক। পেশায় রিকশাচালক। দুই ফিতার স্যান্ডেল পরে গায়ে রঙিন শার্ট আর লুঙ্গি জড়িয়ে এসেছিলেন আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে। যখন একের পর এক মিছিল আসছিল, ভিড় ঠেলে আসলাম তখন মঞ্চের ছবি তুলতে ব্যস্ত। তুলছিলেন সেলফিও। আবার কখনো বা করছিলেন ভিডিও।
তবে তার এমন কাণ্ডে কেউ পাত্তা দিচ্ছিলেন না। অবশ্য, কেউ কেউ বলছিলেন- আবেগী কিংবা পাগল। কারণ, আসলামের হাতে থাকা ফোনটি কোনো স্মার্টফোন নয়। সেটি ছিল নকিয়া ব্র্যান্ডের একটি সাধারণ ফিচার্ড ফোন।
বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে আসলামকে হাতে থাকা ফিচার্ড ফোনটির পেছনের ক্যামেরা দিয়ে সেলফি তুলতে দেখা যায়। দু-একটি ছবি তুলেই খানিক সময় পরপর ফোনের ডিসপ্লের ওপর হাতের ছায়া রেখে দেখছিলেন ছবিগুলো। পরে ফের তুলছিলেন ছবি কিংবা ভিডিও। আনন্দে প্রাণখোলা হাসি যেন সারাক্ষণ মুখে লেগে ছিল তার। আবার কেন্দ্রীয় কোনো নেতাকে দেখলেই চেয়ে থাকছিলেন অপলক নয়নে, চেষ্টা করছিলেন ছবি তুলতে।
কথা হলে আসলাম জানান, তার বাড়ি নাটোরে। থাকেন মিরপুর দারুস সালাম থানাধীন জাহানাবাদ। নিয়মিত মিরপুরে রিকশা চালালেও শনিবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে এসেছেন শান্তি সমাবেশ দেখতে। ইচ্ছা সারাদিন আশপাশে খেপ মারবেন, সমাবেশ দেখবেন। টিভিতে যাদের সমসময় দেখেন, তাদের এবার সামনাসামনি দেখবেন। সেই সঙ্গে ভিডিও করে পরে তা স্ত্রী-সন্তান ছাড়াও বন্ধু-বান্দবকে দেখাবেন।

বিজ্ঞাপন
ফিচার্ড ফোনটিতে কেমন ছবি উঠে- এমন প্রশ্ন করতেই আসলাম বলে উঠেন, ছবি উঠে। সুন্দর ছবি উঠে। ভিডিও হয়। প্রধানমন্ত্রীর (ব্যানারের ছবি) সাথে ছবি তুলছি। ভিডিও করলাম। লোকজন আসছে, ভালো লাগছে। আইজ সারাদিন সমাবেশ দেখমু আর আশপাশে খেপ মারমু।
আসলাম জানান, সমাবেশ দেখবেন বলে নিজের রিকশাটি পাশের একটি জায়গায় তালা মেরে রেখেছেন। পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছেন। উৎফুল্ল কণ্ঠে আসলাম বলেন, ‘তাদের (স্ত্রী-সন্তানদের) ভিডিও দেখামু।
পরে ফোনের ছবি দেখতে চাইলে আসলাম সরল মনে সেগুলো দেখান। তাতে দেখা যায়- নাতিদীর্ঘ দুইটি ভিডিও করেছেন। যেখানে আবছা আবছা সমাবেশের মঞ্চ দেখা যায়। এছাড়াও বেশকিছু ছবি তুলেছেন, তুলেছেন সেলফিও।

রিকশাচালক আসলাম বলেন, ‘আরও ছবি-ভিডিও করা যাবে। মেমরি আছে। অনেক শখ প্রধানমন্ত্রীকে কাছ থেকে দেখার, সে ভাগ্য নাই, সম্ভব না। ওনার (প্রধানমন্ত্রীর) ছবির সাথে ছবি তুলছি। ওনাকে শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি।’
সমাবেশে আসার কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে আসলাম বলেন, ‘আমার মিছিল দেখতে ভালো লাগে। গ্রামে থাকতে যেখানে সমাবেশ হইতো, আমি যাইতাম। এখন ঢাকায় যেখানে হয়, যাই। শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি। যে কারণে আওয়ামী লীগকেও ভালোবাসি। তাই এসেছি। ওনার (বঙ্গবন্ধু) ৭ই মার্চের পুরো ভাষণ আমি মুখস্থ পারি।’ একপর্যায়ে নিজ কণ্ঠে পুরো ভাষণটিও শুনান আসলাম।
ডিএইচডি/আইএইচ








































































