ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু প্রতীক্ষিত ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকেই আবাসিক হল ও বিভিন্ন বিভাগ থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে এসে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন।
ভোট দিতে আসা শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল উচ্ছ্বাস ও আনন্দ। অনেকে জানালেন, এই নির্বাচন তাদের জীবনে এক নতুন অভিজ্ঞতা। তাদের মতে, ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা একটি ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার অংশ হতে পেরেছেন। ক্যাম্পাসে অনেকেই বলছেন, এই দিনটি শুধুই ভোটের দিন নয়, বরং গণতন্ত্র চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
বিজ্ঞাপন
ভোট দিয়ে বের হয়ে শিক্ষার্থী লায়লা রহমান বলেন, আজকের দিনটা আমাদের জন্য উৎসবের দিন। এত বড় একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হতে পেরে সত্যিই দারুণ লাগছে।’
আরেক শিক্ষার্থী সামিরা বলেন, ‘ভোটের লাইনটা বেশ লম্বা ছিল, তবে আনন্দের সঙ্গে অপেক্ষা করেছি। কারণ এটি আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচনের মুহূর্ত।’
শিক্ষার্থী বৈশাখী মুখার্জী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে এমন আনন্দঘন পরিবেশ আগে কখনো দেখিনি। মনে হলো আমরা সত্যিই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ।’
তানজিলা হক নামে আরেক ছাত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ লাইন হলেও সবাই হাসিমুখে দাঁড়িয়ে ছিল। মনে হলো আমরা সবাই একসঙ্গে গণতন্ত্রের পাঠ নিচ্ছি।’
বিজ্ঞাপন
ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন। অনেকেই বলছেন, গণতান্ত্রিক এই চর্চা তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও দায়িত্ববোধ গড়ে তুলেছে।
এদিকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদারকিতে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
ভোট দিতে আসা শিক্ষার্থীদের অনেকেই ভোট দিয়ে কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে আলোচনায় মেতে ওঠেন—কারা জিততে পারে, কারা নেতৃত্বে আসতে পারে এবং ডাকসু নির্বাচনের পর ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি কেমন হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে ডাকসুর ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী রয়েছেন ৬২ জন। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৫ জন প্রার্থী।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা এমন নেতৃত্ব চান, যারা শুধু জনপ্রিয় নয়—সক্রিয়ভাবে শিক্ষার্থীদের অধিকার, নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করবেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, এই নির্বাচন থেকে উঠে আসবে এমন একটি নেতৃত্ব, যারা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবে।
এইউ






















































































































