হঠাৎ করে দেশে বেড়েছে অগ্নিকাণ্ড। এসব অগ্নিকাণ্ডে পথে বসছেন মানুষ। প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের পর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। যারা প্রতিবেদনও দেয়, সুপারিশও করে, কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয় না। অনেক সময় অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণও অজানা থেকে যায়।
এমন অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যে চলতি এপ্রিল মাসে বঙ্গবাজারসহ রাজধানীর একাধিক জায়গায় আগুনের ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরছে সাধারণ মানুষের মনে। বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে পরিচিত মার্কেটগুলোতে অগ্নিকাণ্ডে উদ্বেগ বাড়ছে। অন্যদিকে নানা প্রশ্ন ডালপালা ছড়িয়েছে ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে।
বিজ্ঞাপন
সবশেষ নিউ মার্কেটের পাশে নিউ সুপার মার্কেটে আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে আগুন লাগে। রাতভর বেচাবিক্রি শেষে ব্যবসায়ীরা যখন বাসায় গভীর ঘুমে তখন এই আগুনের ঘটনা ঘটেছে। আগুন লাগার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট কাজ করলেও আগুনের ভয়াবহতা না কমায় প্রশ্ন জাগছে ব্যবসায়ীদের মনে। এর আগে গত ৪ এপ্রিল ফায়ার সার্ভিসের সদর দফতরের একদম কাছের বঙ্গবাজার মার্কেটে অর্ধশতাধিক ইউনিট কাজ করার পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। আগুন নেভাতে শুরুতে অলসতার অভিযোগ তুলে ব্যবসায়ীরা ফায়ার সার্ভিসের সদর দফতরে হামলাও করেন।

শুধু বঙ্গবাজার, নিউমার্কেট নয়, চলতি মাসে আরও বেশ কয়েকটি আগুনের ঘটনা ঘটেছে রাজধানীতে। গত শুক্রবার আগুন লাগে হাজারীবাগের ট্যানারি এলাকায়। যদিও এই আগুনে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগে পুরান ঢাকার নবাবপুর এলাকার গোডাউনে। ফায়ার সার্ভিসের অনেকগুলো ইউনিটের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিজ্ঞাপন
এসব অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে বঙ্গবাজারের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের বেশি ক্ষতি হয়েছে। এখানকার আগুনে কয়েকটি মার্কেটের চার হাজারের মতো ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে গেছেন। মার্কেটের এই জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণের কথা রয়েছে। ফলে এখানকার ব্যবসায়ীদের কারও কারও অভিযোগের তীর সিটি করপোরেশনের দিকে।

পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর দেশে ২৪ হাজারের বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, যার অর্ধেকেই গ্যাস বা বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া ও সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ না নেওয়ায় বড় বড় আগুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ২৪ হাজার ১০২টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে নয় হাজার ২৭৫টি। গ্যাস সরবরাহ লাইনে আগুন থেকে ঘটেছে ৭৯৫টি, স্থিরবিদ্যুৎ থেকে ১৯টি, সিলিন্ডার ও বয়লার বিস্ফোরণ থেকে ঘটেছে ৯৪টি অগ্নিকাণ্ড। চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তিন হাজার ৩৬৮টি, যার অধিকাংশই গ্যাস ও ইলেকট্রিক চুলা থেকে।
বিইউ/জেবি




































































