বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে যশোরজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। প্রিয় নেত্রীর মৃত্যুসংবাদ শুনেই শোকে পাথর হয়ে পড়েন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজারও নেতাকর্মী। সাত সকালেই তারা ছুটে আসেন যশোর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে। কান্না, হাহাকার আর নিস্তব্ধতার মধ্যে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করে যশোর জেলা বিএনপি দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করে এবং কালো পতাকা উত্তোলন করে।
বিজ্ঞাপন
শোকের প্রতীক হিসেবে জেলা বিএনপি ও এর সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কালো ব্যাচ ধারণ করেন।
এ সময় অনেক নেতাকর্মী আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। দলীয় কার্যালয়ে শুরু হয়েছে কোরআন খতম ও তেলাওয়াত। পাশাপাশি মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।
![]()
এছাড়া জেলা বিএনপির কার্যালয়ে শোক বই খোলা হয়। মঙ্গলবার সকালে শোক বইতে সর্বপ্রথম স্বাক্ষর করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। এরপর শোক বইতে স্বাক্ষর করেন যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ জেলা, উপজেলা এবং বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, জেলা শহরের পাশাপাশি উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লা ও গ্রামে গ্রামে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দোয়া ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। মসজিদে মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীরা প্রয়াত নেত্রীর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন, দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। জাতির মহান অভিভাবকের মৃত্যুতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। অশ্রুভেজা নয়নে অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী দীর্ঘ লড়াইয়ের আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু ইতিহাসের একটি পর্বের সমাপ্তি মাত্র। ইতিহাসের নতুন পাতা খোলা হবে। নতুন করে এ দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই হবে। সেই লড়াইয়ে আমাদের তরুণরা নেতৃত্ব দেবে। বেগম খালেদা জিয়ার জীবন এবং লড়াই সংগ্রাম চিরকাল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। দোয়া করি মহান রাব্বুল আলআমিন তাকে বেহেশত নসিব করুক, আমিন।
শোক প্রকাশ করে যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আজ আমরা আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবককে হারিয়েছি। তিনি ছিলেন আপসহীন নেত্রী, যিনি কখনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তার শূন্যতা কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয়। এটি দলের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি, যা কখনো ভোলার নয়। তিনি আরও বলেন, এই আপসহীন নেত্রীকে যারা দীর্ঘদিন কষ্ট দিয়েছে, যাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করা হয়েছে তাদের বিচার আল্লাহই করবেন। ইতিহাস তাদের কখনোই ক্ষমা করবে না।
![]()
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন, তিনি ছিলেন গণতন্ত্রের প্রতীক। তার নেতৃত্বে দল বহু সংকট ও দমন-পীড়ন মোকাবিলা করেছে। আজ তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।
শোক কর্মসূচিতে জেলা বিএনপি ছাড়াও যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সবাই প্রয়াত নেত্রীর আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার আদর্শে ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, জেলা বিএনপির কার্যালয়ে শোক বই সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে এসে শোক বইতে স্বাক্ষর করছেন। প্রিয় নেত্রীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামছে দলীয় কার্যালয়ে।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
প্রতিনিধি/এসএস






























































































