বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

পিরোজপুরে ৭ হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত, ৭২ হাজার মানুষ পানিবন্দি

জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুর
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

পিরোজপুরে ৭ হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত, ৭২ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হয়েছে পিরোজপুরে। গত রোববার (২৬ মে) জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ২ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয় প্লাবিত করেছে। এর ফলে প্রায় ৭২ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। প্রবল বাতাসে সাত হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুসাইর হোসেন বলেন, পিরোজপুর সদর, মঠবাড়িয়া, ইন্দুরকানী, কাউখালি, স্বরুপকাঠী, ভান্ডারিয়া ও নাজিরপুর বিভিন্ন এলাকার নদী তীরবর্তী বেড়িবাঁধ ভেঙে এবং জোয়ারের পানি উপচে লোকালয় প্রবেশ করেছে। এসব এলাকায় ১৫০০ মিটারের বেশি জায়গা থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। তিন থেকে পাঁচ ফুট উঁচু জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


piroj_2

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পিরোজপুর জেলায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত ও ৭২ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে। ৭ হাজারে হেক্টরের অধিক ফসলিজমি নষ্ট হয়েছে। 

piroj_3

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব নিয়ে ৭টি উপজেলাতেই ইউএনওরা ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়ে তালিকা তৈরি করছে। সে অনুযায়ী সকল উপজেলায় সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছি। যা বরাদ্দ ছিল তা দিয়ে সবাইকে দ্রুত সহায়তা করা হচ্ছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত বেশি তাদের সহায়তা আগে দিচ্ছি। তবে পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন অনেক পরিবার। তদেরও খোঁজখবর নিচ্ছি।


বিজ্ঞাপন


পিরোজপুর সদর এলাকার এসকে আলামিন বলেন, রোববার রাত থেকে ঘরে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। কেহই রান্নার ব্যাবস্থা করতে পারছি না কোনো ভাবেই। তবে শুকনো খাবার খেয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছি। ঘূর্ণিঝড় থামার পরে কিছুটা তৃপ্তি পাচ্ছি। 

piroj_4

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে পিরোজপুরে ৭ হাজার হেক্টরের অধিক জমির সবজিসহ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। 

পিরোজপুর জেলা কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। 

piroj_5

ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা জানান, ধান বাদে অন্যসব ফসলের ক্ষতি হয়েছে। চলতি বছর ফসল উৎপাদনে দুইবার ক্ষতির মুখে পড়েন তারা। এক মাসের বেশি সময় তীব্র তাপদাহের কারণে ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিশেষ করে আম ও লিচু ঝরেছে সবচেয়ে বেশি, সেই সঙ্গে শাকসবজিও। দ্বিতীয় দফায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে।

piroj_6

নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতনেচ্ছা এশা জানান, কৃষকের সবজি খেতসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তাপদাহের কারণে সবজির বাজারে একদফা প্রভাব পড়েছে। আর ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে দ্বিতীয় দফায় প্রভাব পড়বে সবজির বাজারে-এমন আশঙ্কা বিক্রেতাদের। ফলে, বাজারে শাকসবজিসহ দেশি ফলের দামও বেড়ে যেতে পারে।

piroj_7

নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা আজরিন তন্বী বলেন, এই উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়েছে এবং ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে গাছ পরার পর থেকেই আমি নিজে লোকজন নিয়ে সড়ক ও নৌপথ সচল করতে কাজ করে সফল হয়েছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি। এবং আশ্রায় কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে খোজ-খবর রাখছি।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর