শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডব, ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো পরিবার

জেলা প্রতিনিধি, বরগুনা
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৪, ০১:০৪ এএম

শেয়ার করুন:

বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডব, ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো পরিবার

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়েছে দক্ষিনাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা বরগুনা। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর না থাকলেও ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের ও বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর রোববার থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর, সোমবার সন্ধ্যায় পৌরসভার কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও জেলার ছয়টি উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষ বিদ্যুতহীন অবস্থায় রয়েছে। সবকিছু সচল করতে মাঠে কাজ করছে প্রশাসন। 

সোমবার (২৭ মে) বিকেলে বড়ইতলা ফেরিঘাট, ডালভাঙা, ঢলুয়া, পুরাকাটা, আয়লা-পাতাকাটাসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রোববার থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। গাছ পরে বসতঘর ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও সড়কে যানবাহন বন্ধ এবং নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় জেলার সঙ্গে ছয় উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 


বিজ্ঞাপন


IMG-20240527-WA0001

চরকলোনী এলাকার প্রিয়া আক্তার বলেন, গতকাল থেকে ঘরে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। রান্নার ব্যাবস্থা করতে পারছি না কোনোভাবেই। তবে শুকনো খাবার খেয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছি। ঘূর্ণিঝড় থামার পরে কিছুটা তৃপ্তি পাচ্ছি।

ঢাকা-বরগুনা সড়কের টাউনহল ব্রিজের ওপরে গাছ পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা নোমান বলেন, এই সড়কের দুই পাশের অন্তত দেড় শতাধিক গাছ উপরে পড়েছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের। 

আরও পড়ুন

দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত ঘূর্ণিঝড় রেমাল

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ জন মানুষ। ৩ হাজার ৩৭৪টি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ১৩ হাজার ৩৪টি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬ হাজার হেক্টর কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে। ৪ হাজার ১৫৭ হেক্টর জমির মাছের ঘের ও জলাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

বরগুনা সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা বলেন, বরগুনায় মোবাইল নেটওয়ার্কের অবস্থা খারাপ থাকায়, ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করার আগে, আমরা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে নেটওয়ার্ক সংযোগ সচল করতে কাজ করছি।  

IMG-20240527-WA0005

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ারা তুম্পা বলেন, এই উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়েছে এবং ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে গাছ পরার পর থেকেই আমি নিজে লোকজন নিয়ে সড়ক ও নৌপথ সচল করতে কাজ করে সফল হয়েছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব নিয়ে ছয়টি উপজেলাতেই ইউএনওরা ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়ে তালিকা তৈরি করছে। সে অনুযায়ী সকল উপজেলায় সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছি। যা বরাদ্দ ছিল তা দিয়ে সবাইকে দ্রুত সহায়তা করা সম্ভব হবে না। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যারা ক্ষতিগ্রস্ত বেশি তাদের সহায়তা আগে দিচ্ছি। তবে পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন অনেক পরিবার। তদেরও খোঁজখবর নিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ঝূঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে প্রশাসনের আপ্রাণ চেষ্টায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। 

প্রতিনিধি/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর