প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল প্রতি ঘণ্টায় ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার বেগে উপকূল অতিক্রম করছে। রোববার (২৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এছাড়া, জোয়ারের সময় ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে আরও পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। তবে বডি মুভমেন্টের ওপর নির্ভর করে এই সময়ের তারতম্য হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
‘ঘূর্ণিঝড়ের রাইট ফরওয়ার্ডিং সেক্টরে সব সময় বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকে। যেহেতু পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া দিয়ে ঝড়টি অতিক্রম শুরু করেছে, বাতাসের গতিবেগ আরও বাড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাব পড়তে পারে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, অভয়নগর, খেপুপাড়া ও ভোলার উপকূলীয় এলাকায়,’ বলেন তিনি।
আবহাওয়াবিদ ড. মল্লিক বলেন, রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে পটুয়াখালীতে আমরা প্রতি ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া রেকর্ড করেছি। সাড়ে ১১টায় খেপুপাড়ায় ৯১ কিলোমিটার, রাত ১১টা ৫৬ মিনিটে মোংলায় ৭৬ কিলোমিটার এবং এর আগে সিলেটেও প্রতি ঘণ্টায় ৪১ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া রেকর্ড করা হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, কোনো কোনো জায়গায় বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ থাকে প্রতি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বাতাসের গতি ৮৯ থেকে ১১৮ কিলোমিটার থাকলে প্রবল, ১১৯ থেকে ২১৯ পর্যন্ত অতি প্রবল এবং বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের বেশি থাকলে সুপার সাইক্লোন বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
এই আবহাওয়াবিদ আরও বলেন, আজ রাত সাড়ে ৯টা থেকে উপকূলীয় এলাকায় জোয়ার শুরু হয়েছে। রেমাল উপকূল অতিক্রম করছে এবং দমকা হাওয়াও অব্যাহত রয়েছে। ফলে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে আট থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হাওয়ার আশঙ্কা এখনো রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
‘এটা ঠিক যে, ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে ওঠার সময় এবং পরবর্তীতে বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়। তবে রিমাল এখন পর্যন্ত শক্তিমাত্রা ধরে রেখেই উপকূল অতিক্রম করছে। আমরা আশঙ্কা করছি, এই ঝড়টি শক্তিমাত্রা ধরে রেখেই উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে,’ যোগ করেন ড. মল্লিক।
সোমবারও দেশের কোথাও কোথাও দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, রেমাল ক্রমাগত দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এরপর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং দেশের উত্তর দিকে এগোতে থাকবে। স্থল নিম্নচাপ হওয়ার পরে আবদ্ধ হয়ে পড়লে ২৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হতে পারে।
/এএস