ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
রোববার (২৬ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে। বর্তমান ঘূর্ণিঝড় রেমাল কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্রায় ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে।
সকাল সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ঢেউয়ের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে সমুদ্র সৈকতসহ আশপাশের আবহাওয়া রৌদ্রজ্জ্বল। আকাশে হালকা মেঘ দেখা গেলেও নেই কোনো বৃষ্টি বা ঝড়োহাওয়া।
জানা গেছে, সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে , ঘূর্ণিঝড় রেমালের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় কক্সবাজারে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, কক্সবাজারের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ জানাচ্ছে প্রশাসন। কক্সবাজারে ৬৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মহেশখালী, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে শুরু করেছে মানুষ।
বিজ্ঞাপন
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সিপিপির ৮৬০০ এবং রেডক্রিসেন্টের ২২০০সহ ১০ হাজার ৮০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৬৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্র। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এছাড়া সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৪৮৬ মেট্রিক টন জি আর চাল, ২ লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল ১৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা, ২৯ বান্ডিল ঢেউটিন সঙ্গে গৃহ নির্মাণ মজুরি অর্থ ৬৯ হাজার টাকা মজুদ আছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে নেওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে রেডক্রিসেন্ট, স্কাউট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে সচেতনতা বাড়াতে উপকূলে মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, ২০ মে হতে সরকারিভাবে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেকারণে আগে থেকেই মাছ ধরার ট্রলারগুলো তীরে নোঙ্গর করা রয়েছে। ছোটখাট যেসব ট্রলার তীরের আশপাশে মাছ ধরে তাদেরকেও সাগরে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়া শুরু হয়। পূর্বাভাস দেওয়া হলেও কক্সবাজারে এখনও এর কোনো বড় প্রভাব দেখা যায়নি। তবে, সাগরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ বিবেচনায় সৈকতে আসা পর্যটকদের গোসলে নিরুৎসাহিত করছে টুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
প্রতিনিধি/এসএস