বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ১৫৩ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার 
প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৪, ০৮:৩৪ পিএম

শেয়ার করুন:

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ১৫৩ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত, আহত -১

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়িবাঁধ ভেঙে পড়ায় জোয়ারের পানিতে জেলার প্রায় ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ১৫৩টি কাঁচা স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

সোমবার (২৭ মে) সকালে কক্সবাজারের মহেশখালীতে গাছের ডাল পড়ে আবুল কালাম (৭৫) নামে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব: গাইবান্ধায় অবিরাম বৃষ্টি

জেলায় প্রস্তুত ৬৩৮ আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ৩১টি কেন্দ্রে ৯৭৮৭ জন বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের মহাবিপদ সংকেত নামার পর অনেক আশ্রিত বাসিন্দারা বাড়ি ফিরে যান। 

বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধস ও প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলায় বজ্রবৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া বয়ে যায়। আগামী কয়েক দিন কক্সবাজারে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বৈরী আবহাওয়ার ফলে প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে সাগর। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমুদ্র সৈকত ও উপকূলে। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে সমুদ্রের ঢেউয়ে তলিয়ে যায় সৈকতের লাবনী ও সুগন্ধা পয়েন্ট। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজার সদরের গোমাতলী, চৌফলদন্ডী  মহেশখালীর মাতারবাড়ি ধলঘাটা, কুতুবদিয়া ও সেন্টমার্টিনের কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সময় জোয়ারের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকশ কাঁচা ঘর-বাড়ি। আগাম প্রস্তুতির কারণে প্রাণহানি না হলেও জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে গবাদি পশু, মাছের ঘের, মাঠের লবণ ও ফসলি ক্ষেত। বাড়ি-ঘর ও জনপদ ভাসছে নোনা জলে। ঝড়ের সময় উপড়ে গেছে গাছপালা। বিচ্ছিন্ন হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। বিঘ্নিত হচ্ছে মোবাইল ফোন-ইন্টারনেট সেবা। বিভিন্ন এলাকায় সড়কে গাছ পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ জেলায় পাহাড় ধসের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে তীব্র ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি 

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হচ্ছে। এই মুহূর্তে সাগরে গভীর নিম্নচাপ বিরাজ করছে। এ কারণে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার জেলায় ৯৩ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঘুর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আরও দু-এক দিন বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করবে কক্সবাজারে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে পাহাড় ধসের আশঙ্কাও রয়েছে। এছাড়া ঝড়ো হাওয়া বেশি হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। 

জেলা বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন - বৈরী আবহাওয়ার কারণে উত্তাল রয়েছে সমুদ্র। এ কারণে মাছ ধরার সমস্ত ট্রলার উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করছে। যদিও ৯ নম্বর সংকেত নামিয়ে ৩ করা হয়েছে। তারপরও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে যাবে না কোন মাছ ধরার ট্রলার। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, নিচু এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় মানুষ ঘরে ফিরে যাচ্ছেন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি কক্সবাজারে। প্রাথমিকভাবে ১৫৩ টি কাঁচা স্থাপনা ক্ষতি ও গাছের ডাল পড়ে একজন আহত হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। 

প্রতিনিধি/ এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর