ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়া হলো না বাংলাদেশি ৩০ কর্মীর। সোমবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাদের ইন্ডিগোর ফ্লাইটে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেনি। বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন তারা। ফলে বাধ্য হয়ে ৩০ কর্মী ইন্ডিগোর কাউন্টারের সামনে গতকাল রাত থেকে অবস্থান করছেন।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, ম্যাস বাংলা ওভারসিস নামে একটি এজেন্সি তাদের মালয়েশিয়ায় পাঠাচ্ছে। তাদের ফ্লাইট ছাড়ার কথা ছিল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায়। কিন্তু রেমালের কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়। এরপর থেকে তারা বিমানবন্দরের ভেতরেই অবস্থান করছেন।
বিমানবন্দরে অবস্থানকারী কর্মীদের একজন ইব্রাহিম। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা গতকাল দুপুরেরও আগে এসেছি। কারণ ফ্লাইট যেন মিস না হয় সেই চেষ্টা৷ কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফ্লাইট বাতিল হলো। তবে আমাদের এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ নিয়ে যাবে কি না কিছু বলছে না। তারা আমাদের কোনো খোঁজখবরও নেয়নি।
বাকিরা জানান, তারা বিষয়টি এজেন্সিকে জানিয়েছেন। এজেন্সি মালিক তাদের সাথে কথা বলছেন। তবে তারা এখনো অনিশ্চিত নন যে মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন কি না।
তারা আরও জানিয়েছেন, গত রাত থেকে তারা বিমানবন্দরের ভেতরেই অবস্থান করছেন। এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে এখনো কোনো যোগাযোগ করেনি। এতে তারা বেশ হতাশ। তারা এখন বিমানবন্দরের ভেতরে জড়ো হয়ে অপেক্ষায় আছেন কখন তাদের ডাক আসবে।
বিজ্ঞাপন
গতকাল ফ্লাইট বাতিল হওয়ার পর তাদের বাসায় চলে যেতে বলা হয়। কিন্তু তাদের বেশির ভাগই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। ওই সময় ঝড়ও শুরু হয়। ফলে তারা কোথায় যাবেন, কী করবেন তা নিয়ে বিপাকে পড়েন। বাধ্য হয়ে তারা বিমানবন্দরের ভেতরেই থেকে যান।
৩০ কর্মী যে এজেন্সির মাধ্যমে যাচ্ছেন সেই ম্যাস বাংলা ওভারসিস এমডি জামিল হোসেন বলেন, আমরা তাদের গতকাল রাত থেকে বলছি যাতে কর্মীগুলো মালয়েশিয়ায় যেতে পারে। কারণ আগামী ৩০ মে তাদের দেশটিতে পৌঁছার শেষ সময়। কিন্তু তারা প্রথম দিকে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। এখন কথা হয়েছে এয়ারলাইন্সটির একজনের সাথে। তিনি জানিয়েছেন তারা বড় একটি ফ্লাইটে কাল-পরশু পাঠাবেন।
তবে যেতে না পারা যাত্রীদের কোনো খাবার, হোটেল রুমে থাকার ব্যবস্থা করেনি এয়ারলাইন্সটি। যদিও এটি নিয়মের মধ্যে পড়ে, কিন্তু তারা খারাপ আবহাওয়ার দোহাই দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। জামিল হোসেন বিষয়টি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) জানিয়েছেন। তারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তাকে জানায়নি।
এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানকে কল করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ইন্ডিগোর শাহজালাল বিমানবন্দরের ইনচার্জ ইব্রাহিম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা তাদের অন্য ফ্লাইটে নিয়ে যাব। যেহেতু তাদের ৩০ মে শেষ সময়, সেই সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।’
তাদের খাওয়া-দাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করেছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে আপনারাও তো বুঝতেছেন আবহাওয়া খারাপ। এখানে কারো হাত নেই। আর এমন অবস্থায় এসব নিয়মেও পড়ে না।’
এমআইকে/জেবি