ওসমান হাদির ওপর গুলি নির্বাচন অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্রের প্রথম ধাপের বাস্তবায়ন। এই ঘটনা বিএনপি ও জামায়াতের জন্য অশনি সংকেত। রাজধানীতে একজন পরিচিত সংসদ সদস্য প্রার্থীকে প্রকাশ্য গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হলো। হাদি এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। হাদিকে যেভাবে খুব সহজে টার্গেট করা হলো একইভাবে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী টার্গেট হতে পারে। বিশেষ করে জুলাইয়ের আন্দোলনের মুখগুলো। এসব হামলার পেছনে আছে প্রচণ্ড প্রতিশোধ স্পৃহা।
লক্ষ্য করে দেখবেন, আওয়ামীপন্থী শাহবাগি সাংবাদিকরা হাদির ওপর হামলার পর বলতে শুরু করেছে- এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের কোনো লাভ নেই। এদের অনেকে এখন বিএনপি সাজার অভিনয় করছে। বিএনপি নেতাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে চাকরি করছে। ফ্যাসিবাদের সময় এরা ভালো ছিল।
বিজ্ঞাপন
নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হওয়ার পর দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। সব জরিপে আওয়ামী লীগের সমর্থন এসেছে ৭ থেকে ১০ শতাংশ। বলা যায়, সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। সেটি হবে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে। এই নির্বাচনি মেরুকরণে দেশের মানুষ জোরালো সমর্থন দিচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের আলামত তার প্রমাণ। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হলে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে দলটি মুসলিম লীগের পরিণতি বরণ করতে যাচ্ছে। এ কারণে আওয়ামী লীগ নির্বাচন বানচালের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করা।
নির্বাচন ঠেকানোর এখন একটি পথ অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। এক পর্যায়ে প্রার্থীদের ওপর হামলা হবে। এমন ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা দুই দল পরস্পরের দিকে আঙ্গুল তুলতে পারে। এতে নির্বাচনি পরিবেশ আরও ঘোলাটে হয়ে পড়তে পারে। ফ্যাসিস্ট ও তার সহযোগীদের লক্ষ্য এখন একটাই।
বিজ্ঞাপন
হাদির ওপর হামলার এক ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী প্রচারবিদরা এর পেছনে মির্জা আব্বাসকে জড়িয়ে ভুয়া প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ একজন পুরানো ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে মির্জা আব্বাসের এমন কাজে জড়ানো যে কতটা আত্মঘাতী তা না বোঝার কোনো কারণ নেই। আবার সাদিক কায়েমের স্ট্যাটাস নিয়ে বির্তক সৃষ্টি করা হচ্ছে। সাদিক চাঁদাবাজ ও গ্যাংস্টার শব্দ ব্যবহার করেছেন। কোনো দল বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে সাদিক যেন বিএনপিকে দায়ী করেছেন। তবে চাঁদাবাজ শব্দটি ব্যবহার না করলে ভালো হতো।
নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক প্রচারনা চলা স্বাভাবিক। কিন্তু তা যেন পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস সৃষ্টি না করে। যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় যেতে হবে এমন নীতি যেন দল দুটি না নেয়। বিদ্বেষ ছড়ানোর এই সুযোগ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ অপেক্ষায় আছে। অতীতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বিদ্বেষের সর্ম্পকের কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পেরেছে। কিন্তু এবার আওয়ামী লীগের প্রতিশোধ পরায়ণতায় অনেককে লাশ হতে হবে। সাবধান।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও বিশ্লেষক
































































